পিবিএ,ডেস্ক: সারাদেশে লকডাউনে মানুষ যখন ঘরবন্দি ঠিক তখনই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ফিরে এসেছে ৩০ বছরের আগের অবিশ্বাস্য দৃশ্য। ফুলে ফুলে সাগরলতা বেড়ে উঠা হরিণ ও ডলফিনের মনোমুগ্ধকর দাপাদাপি।
দিগন্ত ছোয়া বিশাল সমুদ্রের বুকে আপন মনে খেলছেন ডলফিন। সৈকতে নির্ভয়ে ছুটছে মায়াবি হরিণ। লালকাকড়া দল যেন খোঁজে পেয়েছে অবাধ বিচরণের আপন ভূমি। সমুদ্র পারে উড়ন্ত বালি ধরে রেখেই সাগরলতা একেক করেই তৈরি করছে বালির টিলা। নয়ানাবিরাম এমন দৃশ্য পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের।
অথচ কিছুদিন আগেও দেশি-বিদেশি লাখও পর্যটকের ভিড়ে তেমন একটা দেখা মিলতো না সাগরের এমন রুপ। সৈকতে বীচ বাইক, জেটিক্সি, স্পীড বোট ও প্রচণ্ড কোলাহলে এই প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র যেন হারিয়ে বসেছিল তার সখিয়তা। সাগরের পর্যটকদের অনিয়ন্ত্রিত দাপাদাপিতে সমুদ্রের পানিকূল খোঁজে পাচ্ছিল না অভয়ারণ্য।
বর্তমান করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে প্রায় একমাস ধরে কোলাহল নেই সৈকত জুড়ে। ফলে সাগরের প্রাণী ও উদ্ভিদরা ফিরে পেয়েছে তাদের নিরাপদ আবাদস্থল। মনোরম এমন দৃশ্য আরও টানছে পর্যটকদের। লালকাকড়ার বিচরণসহ চোখজুড়ানো এমন দৃশ্য কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী, লাবনী ও হিমছড়ি পয়েন্টে।
বহুদিন পর জীববৈচিত্রের এমন রুপকে বিশেষজ্ঞরা শুভ লক্ষণ হিসেবে দেখছেন। বলছেন, জনমানবের কোলাহল না থাকায় পরিবশে তার আপন স্বত্তায় ফিরতে শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনে বিপন্ন পরিবেশ ও ইকোসিস্টেম করোনাভাইরাসের কারণে সমুদ্র সৈকতে পর্যটক নিষিদ্ধ না হলে অজানাই থেকে যেত এই তথ্য।
এই বিষয়ে মো.মহিদুল ইসলাম (বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট) বলেন, সমুদ্র সৈকতের এমন দৃশ্য সবসময় দেখা যায় না। পর্যটকের কারণে জীববৈচিত্ররা সমুদ্রের সৈকতের কিনারে আসে না। তখন তারা সমুদ্রের মাঝখানে থাকে। এখন লকডাউনের কারণে পর্যটক না থাকায় নির্ভয়ে চলাচল করতে পারছে তারা।
আ ন ম হেলাল উদ্দিন (সেক্রেটারি, সিভিল সোসাইটিস ফোরাম, কক্সবাজার) বলেন, আমাদের বিরল এই সমুদ্র সৈকতটাকে প্রকৃতির লালন করার একটা চিন্তা কর্তৃপক্ষ যদি করতেন তাহলে এটা আমাদের জন্য বা জাতীর জন্য অনেক সুন্দর একটা সুন্দর সিস্টেম বয়ে আনতো।
এদিকে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে পরিবেশ জীববৈচিত্র আর ইকোসিস্টেম সুরক্ষার পাশাপাশি পরিকল্পিত পর্যটন শিল্প কক্সবাজারে গড়ে তুলার তাগিদ অনুভব করছেন স্থানীয়ারা।
পিবিএ/এএম