কারামুক্তি পেতে আর কত ধাপ পার হতে হবে মিন্নিকে

পিবিএ,বরগুনা: বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে গতকাল বৃহস্পতিবার জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে জামিন পেলেও কারামুক্তি পেতে আরও কয়েক ধাপ পার হতে হবে মিন্নিকে। হাইকোর্টে মিন্নির জামিন আবেদনের পক্ষে থাকা আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা সাংবাদিকদের বলেন, বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের রায় বের হওয়ার পর এটা বরগুনা আদালতে পাঠানো হবে। এরপর সেখানে জামিননামা দাখিল করা হবে। সেখান থেকে কারাগারে পাঠানো হবে আদেশটি। কারাকর্তৃপক্ষ আদেশ পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সেরে তাকে মুক্তি দেবেন।

তবে এর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ যদি আপিল বিভাগে আবেদন করেন, আর আপিল বিভাগ যদি হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন, তাহলে মিন্নি আর বের হতে পারবেন না। তবে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকলে মুক্তিতে বাধা থাকবে না বলেও জানান তিনি। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার পরই রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে, তারা আপিল বিভাগে আবেদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া মিন্নির আরেক আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘যদি সরকার আপিল না করে, তা হলে হাইকোর্টের আদেশ বরগুনার আদালতে পৌঁছানোর পর মিন্নি মুক্তি পাবেন। তাই আগামী সোমবারের মধ্যে তার মুক্তি মিলবে বলে ধারণা করছি।

মিন্নির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি যে প্রকারে নেওয়া হয়েছে এবং যেভাবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সব দিক বিবেচনা করে বৃহস্পতিবার তার রুল অ্যাবসুলিউট অর্থাৎ জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। আদালত বলেছেন, মিন্নির প্রতি একটাই নির্দেশ, তিনি তার বাবার জিম্মায় থাকবেন এবং মিডিয়ার সামনে কোনো বক্তব্য দিতে পারবেন না এবং জামিনের অপব্যবহার করলে তার জামিন বাতিল করা হবে। পাশাপাশি পুলিশ সুপার সম্পর্কেও আদালত একটি অবজারভেশন দিয়েছেন। আদালত বলেছেন, যে পদ্ধতিতে তিনি (পুলিশ সুপার) মিন্নি দোষ স্বীকার করার আগেই দোষ স্বীকার করেছেন বলে প্রেস ব্রিফিং করেছেন, সেটা দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত।

আদালত আরও বলেছেন, এই পদে থেকে একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি এ ধরনের কোনো বক্তব্য দিতে পারেন না, যা তদন্ত কার্য এবং বিচারকার্যে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। যেহেতু মামলাটি তদন্তনাধীন সে কারণে আর কোনো বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন আদালত। গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাত শরীফকে। ওই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সাব্বির আহমেদ ওরফে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী তাকে রামদা দিয়ে কোপাচ্ছেন। ঘটনার দিন থেকেই নিখোঁজ হন তারা।

ঘটনার ছয় দিন পর গত ২ জুলাই নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। পরে রিফাত ফরাজীকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। এরপর একে এক এই মামলার অন্যান্য আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী মিন্নিকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। তার জামিন চেয়ে আবেদন করলে গত ২১ জুলাই বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে তা নাকচ হয়।

পিবিএ/বিএইচ

আরও পড়ুন...