মোঃ আহাদ মিয়া , মৌলভীবাজার : ক্রেতাশূন্য বাজারে টমেটো নিয়ে বিক্রি করতে পারছেন না কৃষক। জমির মধ্যেই পচে নষ্ট হচ্ছে টমেটো।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের রামেশ্বরপুর গ্রামের সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় জমির মধ্যেই পাকা টমেটো পঁচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
পাকা টমেটো সংগ্রহ না করার কারন জানতে চাইলে কৃষক ইনসান মিয়া ও মকছন মিয়া জানান, লকডাউনের কারণে শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার ও কমলগঞ্জের বড় বড় বাজার গুলোতে পাইকার না আসার কারনে, আমরা কৃৃষকরা উৎপাদিত সবজি নিয়ে বিক্রি করতেও পারছি না। যে কারনে আমরা গাছ থেকে পাকা টমেটো সংগ্রহ করছি না।
ক্ষতিগ্রস্ত এসব কৃষকরা বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ৫০ পয়সা দামে বিক্রি করছেন, কারন বাজারে অবিক্রীত টমেটো বাড়িতে নিয়ে আসতে ভাড়া লাগবে তাই অল্প মৃল্যে বিক্রি করে দিচ্ছেন। কৃষক মছকন মিয়া বলেন ৪০০ কেজি টমেটো মাত্র ২০০ টাকা বিক্রি করেছি, তার মধ্যে রিক্সা ভাড়া ১৫০ টাকা দিয়েছি এবং অবশিষ্ট মাত্র ৫০ টাকা বাড়িতে নিয়ে এসেছি। এজন্য বাজারে আর টমেটো নিয়ে যাই না। গত এক সপ্তাহ ধরে তিনি জমি থেকে টমেটো সংগ্রহ করছেন না, গাছ থেকে টমেটো সংগ্রহ করে বাজারে নিয়ে গাড়ি ভাড়ার টাকা দিতে পারেন না বরং ভর্তুকি দিতে হয়। টমেটো সংগ্রহের অভাবে জমিতেই পচে নষ্ট হচ্ছে। করোনার কারনে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষক মছকন। কৃষকরা একদিকে লোকসান অন্যদিকে ঋণের বোঝা তার মধ্যে খাদ্য সংকটের মধ্যে পড়েছেন। যদিও ঋণের টাকা করোনা ভাইরাসের কারনে বর্তমানে পরিশোধ করতে হচ্ছে না, কিন্তু পরবর্তীতে করতে হবে।
কৃষকরা আরও জানান, পুনরায় যাতে আমরা জমিতে চাষাবাদ করতে পারি সেজন্য সরকার আমাদের কিছু সাহায্য করুক।
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম পিবিএকে বলেন, লকডাউনের কারনে কৃষকরা উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারছেন না, তারা লোকসানের শিকার হচ্ছেন, কৃষি সম্প্রসারণঅধিদপ্তর থেকে কৃষকদের জন্য কোন প্রমোদনা আসলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কে প্রদান করব।
তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য অধিদপ্তর জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার যে প্রমোদনা করেছেন, তা কৃষকদের আবেদনের ভিত্তিতে ৪% হারে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দেওয়া হবে।কমলগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ইতিমধ্যে উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করছে এবং তারা যাতে পুনরায় চাষাবাদ করতে পারেন সেজন্য আমরা তাদেরকে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি যাতে তাদের মনোবল ভেঙে না যায় এবং চাষাবাদে উৎসাহী হয়।
পিবিএ/মোআ