শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত, লালমনিরহাট (পিবিএ) : লালমনিরহাট সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্কে বহিঃ বিভাগ ও জরুরী বিভাগে রোগীর ভীর কমলেও বেড়েছে গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে।
কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের সুরক্ষা পোশাক ছাড়াই ঝুঁকি নিয়েই চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে। এতে কোন আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে ডাক্তারের সংক্রমিত হবার ঝুঁকি রয়েছে। সেরকম হলে আবার ডাক্তার থেকে ভাইরাস বিস্তার হতে পারে।
মঙ্গলবার জেলার বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ক্লিনিকেই চিকিৎসা সেবা নিতে আসা লোকজনের ভিড় ছিল লক্ষণীয়।
সরজমিনে দেখা গেছে, করোনা ভাইরাস আতঙ্কে হাসপাতালের চিকিৎসকদের ফেরত দেওয়া সাধারণ সর্দি, জ্বর ও কাশি বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা এখন জীবন বাঁচাতে ভিড় করছেন গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকে। প্রতিবেশীদের ফেরাতে ব্যর্থ হয়ে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন লালমনিরহাটের ১৭১টি ক্লিনিকের ১৭১ জন সিএইচসিপি।
নাগরিক অধিকার স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকার প্রতিটি সাবেক ওয়ার্ডে ন্যূনতম একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন সেই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি)।
সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) সংকটের অযুহাতে সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে সাধারণ সর্দি-জ্বর বা কাশিতে আক্রান্তদের এক প্রকার চিকিৎসা দেওয়া বন্ধ রেখেছেন চিকিৎসকরা। আতঙ্কে রোগীর শরীরের তাপমাত্রাও মাপা হচ্ছে না বলে বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা লোকজন অভিযোগ করেন। কিন্তু গ্রামীণ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রাথমিক চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত সিএইচসিপিরা। কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করেই সাধারণ মাস্ক পরেই রোগী দেখে দিচ্ছেন প্রাথমিক ওষুধ। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সেবা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার পালন করছেন বলে দাবি সেবা প্রদানকারী কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের।
পাশাপাশি অন্য রোগী আক্রান্ত হয়ে যেসব রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে তারা করোনা রোগীর ভয়ে একটু সুস্থ্য হলেই বাড়ি চলে যাচ্ছে। অনেকেই অসুস্থ্য হয়েও করোনা রোগীর ভয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসছে না।
কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা বলেন, জ্বরের কথা শুনলে হাসপাতালের ডাক্তাররা ভয়ে রোগীর কাছে আসতে চায় না। আমরা স্থানীয় মানুষ। অধিকাংশ রোগী আমাদের প্রতিবেশী ও পরিচিত তাই মানবিক কারণে আমরা ঝুকি নিয়েই চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নিমর্লেন্দু রায় বলেন, জেলার মানুষজনের করোনা ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের মোট ৭৪৫ জন কর্মী। যার মধ্যে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ৮০ জন ও নার্স ১৬০ জন। এ ছাড়াও তাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতার জন্য রয়েছেন ১৩৪ জন বিভিন্ন পদের স্টাফ, মাঠ পর্যয়ে স্বাস্থ্য সহকারী/পরিদর্শক ১৯৫ জন ও কমিউনিটি হেল্থ প্রোভাইডার ১৭৬ জন। আমরা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছি।
পিবিএ/মোআ