পিবিএ আন্তর্জাতিক: কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ এড়াতে নানা ধরনের বিধি-নিষেধ রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী কারো শেষকৃত্যে ২৫ জনের বেশি উপস্থিত থাকতে পারবে না। কিন্তু সেই নিয়ম যে শুধু কাগজে-কলমে, নতুন করে তা প্রমাণ হলো ভারতের আসামে।
জানা গেছে, আসামের নওগাঁ জেলায় মুসলিম আলেমের দাফনে ভিড় করলেন হাজার হাজার মানুষ। তার পরই করোনার ভয়ে তিনটি গ্রামে সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।
গত ২ জুলাই মারা যান নওগাঁ জেলার জনপ্রিয় মুসলিম আলেম খায়রুল ইসলাম। তিনি অল ইন্ডিয়া জামিয়তে উলেমার সহ-সভাপতি ছিলেন। এছাড়া উত্তর-পূর্বের ‘আমির-ই-শরিয়ত’ও ছিলেন। তার ছেলে আমিনুল ইসলাম নওগাঁর ধিং কেন্দ্রের অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট এর বিধায়ক। সে কারণে নওগাঁয় যথেষ্ট প্রভাব ৮৭ বছর বয়সী খায়রুল ইসলামের।
মৃত আলেমের পরিবার চেয়েছিল ৩ জুলাই শোকমিছিল ও দাফন হোক। পরে পরিকল্পনা বদলে ২ তারিখই দাফন হয়। ধর্মগুরুর শেষযাত্রায় কাতারে কাতারে লোক জমায়েত হন। তার মধ্যে অনেকের মুখে না ছিল মাস্ক, না মানা হচ্ছিল দূরত্ববিধি।
ভারত সরকারের হিসেবে তার দাফনে ১০ হাজার মানুষ ছিল। বেসরকারি হিসেবে সেই সংখ্যা আরো বেশি। ভিড়ের বিষয়টি প্রথমে নওগাঁর বাইরে বের হয়নি।
কিন্তু আলেমের ছেলে বিধায়ক আমিনুল ইসলাম সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এক পোস্ট করেন। তার তা থেকেই বিষয়টি সামনে আসে। বাবার দাফনে বিশাল ভিড়ের ছবি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে পোস্ট করলে নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন।
করোনা সংক্রমণের শঙ্কায় নওগাঁর তিনটি গ্রাম পুরোপুরি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। পুরো ঘটনায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়।
যার মধ্যে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে পুলিশ। নওগাঁর ডেপুটি কমিশনার যাদব সাইকিয়া বলেন, দাফনে কোনো আইনশৃঙ্খলার সমস্যা ছিল না। কিন্তু ভিড়ে দূরত্ববিধি বজায় রাখা, মাস্ক পরার মতো নিয়ম মানা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।
তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে প্রয়াত আলেমরে বিধায়ক-ছেলে জানিয়েছেন, তার বাবা খুব জনপ্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। তার ভক্তের সংখ্যাও প্রচুর। নিয়ম মেনেই জেলাপ্রশাসনকে আলেমের দাফনের কথা জানানো হয়েছিল; যাতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
পিবিএ/এসডি