করোনা প্রতিরোধে বাংলার গ্রামই উত্তম

শতাব্দী আলম : বাংলার গ্রাম বাঙালির শিকড়। ঝড়, করোনা বা পরিবহন সংকট কোন কিছুই গ্রামের হাতছানি থেকে বাঙালিকে নিবৃত করতে পারে না। তাছাড়া ভোরে রাজধানী থেকে সোজা হাটতে থাকলে দিনাদিনি দেশের মধ্যাঞ্চলে কিনতু পৌছা যায়। যারা একটু দূরবর্তী এলাকায় তারা দেশের মধ্যাঞ্চলে এক রাত জিরানী দিয়ে পরদিনই বাড়ি যেতে পারে। ঈদ হলেতো কথাই নেই। যেভাবেই হোক গ্রামে তার যাওয়া চাইই চাই।

মহামারি করোনাকালেও বাংলার গ্রামগুলো বসবাসের জন্য বিশেষ উপযোগী। শহুরে বহুতল খুপরি(ফ্লাট গুলি এমনই) বা শ্রমিকের ঝুপরির চাইতে গ্রামের বাড়িগুলো করোনা বসবাসের জন্য ঢের ভালো। এক বাড়ি থেকে আরেকবাড়ি বেশ খানিকটা দূরে। গ্রামের একেবারে নিন্মবিত্ত পরিবারের ঘরও আর যাই হোক ঝুপড়ি না। এক বাড়িতে এক পরিবারই থাকে। তাই করোনা কালে কোয়ারেন্টাইনের জন্য বিশেষ উপযোগী। শহুরে ঝুপরিতে এক রুমে ৪/৫ জন বসবাস করে। গ্রামের বাড়িতে তা নয়।
পেটের তাগিদে শহরে যেতেই হবে। তবে করোনা কালের এই ছুটিতে জনসাধারণকে গ্রামের বাড়িতে রাখতে পারলেই ভাল। এতে শহরে সংক্রমণের ঝুকি কমবে। পাশাপাশি শহরে থেকে থেকে হাসফাস জীবন কিছু দিনের জন্য মুক্ত বাতাসে নতুন ভাবে সজিব হোক।

তবে বাঙালির আতিথিয়েতা বা বেড়ানো বিলাসিতা ঐতিহ্য যুগ যুগ ধরে চলছে। কোন উপলক্ষ্য পেলেই সে বেড়িয়ে পরে। মেলা-বান্নি, ঈদ, পুজা-পার্বন, বড়দিন বৌদ্ধ পূর্ণিমা সব কিছুই বেড়ানোর উছিলা। এজন্য কোন নিমন্ত্রণও লাগে না। শুধু পরনের জামা আর হাতে ঝুলিয়ে এক কাদি কলা বা এক হাড়ি মিষ্টি নিয়ে আত্মীয় বাড়ি হাজির হলেই হলো। আর আত্মীয়ও জেন অতিথি সেবার নামে নিজ রসনা তৃপ্ত করার মওকা পায়। মাছ, মাংস, কালিয়া, ফিরনি আরো কত খাবারের বাহার।

প্রিয় ভাইয়েরা আমার এবারের করোনা কালের ঈদে বাড়ি আসুন তাতে আপত্তি নেই। তবে সেই বিলাসিতার বেড়ানো থেকে বিরত থাকতেই হবে। অন্য সময় যেমন ঈদের ছুটিতে শশুরবাড়ি বেড়ানোর বিলাসিতা থাকে, করোনা কালে তা থেকে বিরত থাকতে হবে। একইভাবে কিশোর-কিশোরীরা ঈদের ছুটিতে নানা বাড়ি, খালা বাড়ি, ফুপু বাড়ি, বন্ধু-বান্ধবীর বাড়ি বেড়াতে গিয়ে থাকে। তাও করা যাবে না। নিজ নিজ বাড়িতে পরিবারের সাথে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।

গ্রাম বাঙালির শেকড়। মানুষ বিপদে-আপদে, সুখে-দুখে সব পরিস্থিতেতে শিকড়ের কাছাকাছি থাকতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। যেখানে মহামারি করোনা তখনতো আরো বেশী শিকড়ের হাতছানি। তাই শত কষ্ট হাজারো বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে মানুষ গ্রামে ছুটছে। আসুন গ্রামে আসুন। পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করুন। স্বাস্থ্য বিধি মেনে দূরত্ব বজায় রেখে করোনা প্রতিরোধ করুন।

পিবিএ/শতাব্দী আলম

 

আরও পড়ুন...