করোনাভাইরাস নিয়ে অজানা কিছু কথা

coronavirus

পিবিএ ডেস্ক: বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এ ভাইরাসটিকে বলা হচ্ছে নোবেল করোনাভাইরাস, এখানে ‘নোবেল’ শব্দের অর্থ হচ্ছে নতুন। করোনাভাইরাস আগে থেকেই আমাদের মধ্যে ছিল। তবে করোনাভাইরাস গোত্রের যে ভাইরাসটি এখন ছড়িয়েছে তা আগে দেখা যায়নি। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে দুই-একজন করে এরকম রোগী পাওয়া যাচ্ছিল। চীন প্রথমে ভেবেছিল সার্স কিংবা মার্সের মতো কিছু। কিন্তু পরে রোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ার পরও যখন ভাইরাসটি শনাক্ত করা যাচ্ছিল না তখন চীন নিয়ম অনুযায়ী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে জানায়। জানুয়ারির ৮ তারিখে এসে আমরা জানলাম এটা সম্পূর্ণ নতুন করোনাভাইরাস। এর আগে কখনো এটা মানুষকে সংক্রমণ করেনি।

করোনাভাইরাসের উৎস নিয়ে নানাবিধ কথা প্রচলিত আছে। উহানে সামুদ্রিক খাবার বিক্রি হয় এমন বাজারে যারা গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে বেশি সংক্রমিত হয়েছিল এ ভাইরাস। তখন থেকে আমরা জানি যে যেকোনো ধরনের বন্যপ্রাণী থেকে এটা হতে পারে, কারণ সেই বাজারে শুধু সামুদ্রিক খাবার বিক্রি হয় না, নানা ধরনের বন্যপ্রাণীও বিক্রি হয়। কেউ কেউ প্রথমে সাপের কথা বলছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা জিনোম বিশ্লেষণ করে দেখেছি বাদুড়ে যে ধরনের করোনাভাইরাস পাওয়া যায় সেটার সঙ্গে ৯৬.৫% নতুন এ ভাইরাসের সঙ্গে মিল রয়েছে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট কোনো উৎস এখনো পাওয়া যায়নি। এ ভাইরাস কোনোভাবে মানুষে সংক্রমিত হওয়ার পর তা মানুষ থেকে মানুষ সংক্রমিত হয়ে যাচ্ছে। সে জন্যই এ ভাইরাস বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আতঙ্কে গণহারে মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই। মাস্ক ব্যবহারে কিছু নিয়মকানুন আছে। আইইডিসিআর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে নির্দেশনা আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব নিয়মকানুনের কথা আমরা জানতে পারছি তার বেশির ভাগই ভুল। মাস্ক পরতে হলেও নিয়ম জানতে হবে। সবধরনের মাস্কই যে কোনো পরিস্থিতিতে পরা যাবে বিষয়টি তা নয়। আর রোগী যদি মাস্ক পরে থাকে তাহলে অন্যদের মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই। রোগীকে পরামর্শ দেব, ‘আপনি মাস্ক পরবেন’। তবে বাংলাদেশে যেহেতু কোনো রোগী এখনো পাওয়া যায়নি তাই করোনাভাইরাসের ভয়ে রাস্তায় মাস্ক পরে ঘুরে বেড়ানো অনেকটাই অপ্রয়োজনীয়।

করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে যিনি চিকিৎসা দেবেন এবং নমুনা সংগ্রহ করবেন তারা শুধু এন৯৫ মাস্ক পরবেন। এটা সবাই পরতে জানে না। প্রশিক্ষণ না থাকলে যে এ মাস্ক পরবে সে ভুল করবে এবং ইনফেকশনের ঝুঁকিতে থাকবে। এটা ভুল করে পরলে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকবে। মেডিকেল কর্মী না হলে এবং রোগীদেরও এটা একদমই পরার দরকার নেই। যারা শ্বাসপ্রশ্বাসের রোগী তারা এটা পরলে তাদের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। মানবজাতি যখন এ ধরনের সংকটে পড়ে তখন অনেক ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এজন্য সংবাদের নির্ভরযোগ্য উৎস দেখে, সংবাদের মূল্য বুঝে পড়তে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আইইডিসিআরসহ বেশ কয়েকটি দায়িত্বশীল ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য পাওয়া যাবে।

পিবিএ/বিএইচ

আরও পড়ুন...