করোনাভাইরাস নিয়ে শঙ্কিত হলেও নির্বাচন স্থগিত হবে না :সিইসি

পিবিএ,ঢাকা : করোনা ভাইরাস নিয়ে আমরা অত্যন্ত শঙ্কিত আছি। আমাদের আশঙ্কা আছে, দুশ্চিচিন্তগ্রস্থ আছি। যেহেতু নির্বাচনে আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি আছে, সুতরাং এই নির্বাচনে আমরা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিতে পারবো না বলেছেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা ।

তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে ঠিক হয়ে যাবে হয়তো। আগামী ২১ তারিখে ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনটা পেছাতে চাচ্ছি না। এর মধ্যেই আমাদের কাজ করতে হবে। তবে যারা নির্বাচনে কাজ করবেন তাদেরকে সতর্ক অবস্থায়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা যদি মেনে না চলা হয়, তা হলে নির্বাচনে প্রতিদবন্ধকতা সৃষ্টি হবে।

আজ সোমবার রাজধানীর নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ঢাকা-১০ আসনের উপ-নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় করণীয় ঠিক করতে আয়োজিত এক বৈঠকে একথা বলেন তিনি।

এসময় সিইসি করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চকিস) নির্বাচন, পাঁচ আসনের উপ-নির্বাচনসহ সকল নির্বাচনের প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার কাজে জনসভা, পথসভা পরিহার করার জন্য বললেন। এক্ষেত্রে তিনি অন্য বিকল্প প্রচার মাধ্যম বেছে নেওয়া অনুরোধ জানিয়েছেন।

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) সকল ধরণের জনসমাগম না করার নির্দেশনা বিষয়টি সাংবাদিকরা সামনে আনলে সিইসি বলেন, ‘আমার এখনই বিষয়টি টেক আপ করবো। মেসেজটা যেন পৌছে দিতে পারে, সেজন্য ব্যবস্থা নেবো, আমাদের যত নির্বাচন আছে। প্রার্থীরা যেন সীমিত আকারে অন্য ডিভাইসে প্রচার করে, যেন জনসভা, পথসভা পরিহার করে সে অনুরোধ করবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন বন্ধ করিনি এখনো। যতক্ষণ বন্ধ করিনি, ততক্ষণ হবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে আমরা অত্যন্ত শঙ্কিত আছি। আমাদের আশঙ্কা আছে, দুশ্চিচিন্তগ্রস্থ আছি। যেহেতু নির্বাচনে আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি আছে, সুতাং এই নির্বাচনে আমরা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিতে পারবো না। আল্লাহর রহমতে ঠিক হয়ে যাবে হয়তো। আগামী ২১ তারিখের নির্বাচনটা পেছাতে চাচ্ছি না। এর মধ্যেই আমাদের কাজ করতে হবে। তবে যারা নির্বাচনে কাজ করবেন তাদেরকে সতর্ক অবস্থায়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা যদি মেনে চলা হয়, তা হলে নির্বাচনে প্রতিদবন্ধকতা সৃষ্টি হবে।

তিনি বলেন, আমরা একটি এমন একটা জাতি যে ন্যাচারাল টলারেন্স। হাজার বছরের অভ্যাস প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে। জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, মহামারি, কলেরা, বস্ত, ম্যালেলিয়া। আবার মানুষ সৃষ্টি দে র্যোগ-যেমন রানা প্লাজারি ঘটনা, অগ্নিকাণ্ড, হলি আর্টিজানের ঘটনা, মানুষ স্বতফূরর্তভাবে জীবনের ঝুকি নিয়ে দুযোগ মোকাবেলা করে থাকে।

তিনি বলেন, পৃথিবীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমরা একটা মডেল। যে কোনো ক্রাইসিসে সময় লোকজন স্বতস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসেন। পৃথিবীর অনেক দেশেই এই স্বতস্ফূততা নেই।েএই শক্তি আমাদের আছে। এই শক্তিকে সামনে রেখেই বলবো যে, দুর্যোগ যাই আসুক মোকাবেল করা যাবে। করোনা ভাইরাসও মোকাবেল করা যাবে। আমরা নির্বাচনটা পেছাতে চাচ্ছি না।

নির্বাচনে সময় এজেন্টরা যদি কেন্দ্রে যায়, তার নিরাপত্তা দায়িত্ব গ্রহণ করবেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমরা অনেক সময় দেখি, যে এজেন্ট যেতে দেওয়া হয়নি বলা হয়। কিন্তু আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি তারা যায়নি। তাই যারা প্রার্থী তাদের অনুরোধ করবো-সক্ষম , দায়িত্বজ্ঞান সম্পন্ন এজেন্ট নিয়োগ দেবেন। তারা যেন ফাঁকি না দেন। তারা যেন ভোটকেন্দেত্র যান। তারা না গেলে তাদেরকে কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। পথে প্রতিবদ্ধকতার শিকার হলে সেটা আমরাদের বলতে হবে। এজেন্ট একটা নির্ভযোগ্য ব্যক্তি। কোনো অনিয়ম হলে প্রতিবাদ করবেন, আমাদের বলবেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে এজেন্টদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আমার এজেন্টদেরকে একটা প্রশিক্ষণ দেবো। যেহেতু ইভিএমে ভোট হবে। আননদ্রে বিষয় হেলো সব দলেল এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তাদের দায়-দায়িথ্ব যারা সব বোঝিয়ে দেওয়া হবে।

এই আসনে মুলত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্ধিতা হবে। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন আর ধানের শীষ প্রতিকে বিএনপির প্রার্থী শেখ রবিউল আলম।

ঢাকা-১০ ছাড়াও গাইবান্ধা-৩ ও বাগেরহাট-৪ আসনের উপ-নির্বাচন আগামী ২১ মার্চ। ২৭ ডিসেম্বর গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর-পলাশবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য ডা. ইউনুস আলী সরকার মারা যাওয়ায় তার আসন শূন্য হয়।

দুইদিন পর ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। ১০ জানুয়ারি বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনের সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, পাঁচবারের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী ডা. মোজাম্মেল হোসেন মারা যান। ফলে এই আসন শুন্য হয়।

পিবিএ/জেডআই

আরও পড়ুন...