শতাব্দী আলম : শুভ নববর্ষ ১৪২৭। এসো হে বৈশাখ, এসো হে এসো। কবিতার পঙক্তি লিখে যতই মনকে প্রবোধ দিতে চেষ্টা করছি। না কোনভাবেই আবেগ প্রশমিত হয় না। গ্রামে ক্লাবঘরের সামনে মাঠে লাইন করে বসে পান্তা ইলিশের স্বাদ এতে কি মিটে। না মিটছে না। এই দিনে প্রতিবারই আউড়িয়েছি, পুরাতনকে ঝেড়ে ফেলে নতুনকে বরণ করার শ্লোক। আজো নতুন কিছুর প্রত্যাসা মনে উঁকি দিয়েছে। তবে তা একেবারেই অন্যরকম। নব জীবনের আকাংক্ষা। করোনা- কালের আবর্ত মারিয়ে প্রতিটি মানুষের জীবন মুক্ত আলোয় উদ্ভাসিত হোক।
এই যে শিরোনাম লিখলাম, ‘করোনায় বৈশাখী হোক নবজীবনের প্রেরণা’। এ কথাতেই স্পষ্ট মানবজীবনে মহামারি ‘করোনা’ কতটা প্রভাব বিস্তার করেছে ।
এম্বুলেন্সের সাইরেনে ঘুম ভেঙেছে। হয়ত নতুন কোন রোগী হাসপাতালে আনা হলো। রাজধানী উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরে আমার অফিসের অনতিদূরেই রিজেন্ট হাসপাতাল । এখানে করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করা হয়। হলফ করেই বলতে পারি করোনার অতি সন্নিকটে অবস্থান করছি। তাতে কি ! নবচেতনার বৈশাখ আমাকে উজ্জিবিত করে। মুছে যাবে গ্লানি, সূচি হবে ধরা।
বাঙালির বৈশাখ স্বমহিমায় ভাস্বর। তার নিজস্ব মহিমা কোনভাবেই ম্লান হতে দিবে না। হোক সে করোনা মহামারি বা আরো কিছু। বৈশাখ কখনো ম্লান নয়। এইতো একটি কবিতায় তাকে চির জাগরুক করছে কবি।
রমনার বটমুল খাঁ খাঁ,
টিএসসি চত্বরে গোল হয়ে বসা হলো না বন্ধু আর বান্ধবীরা
চারুকলার র্যালিতে নিশ্চিত একটি করোনার লাশ এঁকে দিতাম
পান্তা ইলিশ তরমুজ বা কাঁচা আমের ভর্তা তুলে রাখলাম
বাসন্তি শাড়িরা ভাঁজে ভাঁজে স্বপ্ন লুকিয়ে রাখো
সখির কোমড়ে জড়িয়ে খোলা মাঠে মাটির ছাপও লাগলো না, তো কি !
বৈশাখের করোনা তো হয়নি !
আবার আসিবে বার বার ফিরে
বৈশাখ আসিবে নবজীবনে
আমাদের হৃদয় জুড়ে।
পিবিএ/মোহাম্মদ আলম