পিবিএ ডেস্ক: ডিসেম্বরে প্রাদুর্ভাব শুরুর পর ১১ জানুয়ারি করোনায় প্রথম মৃত্যুর কথা জানায় চীন। এর ৮২ দিন পর তা ৫০ হাজার ছাড়ায়। এক লাখ মানুষ মারা যেতে সময় লাগে ৯০ দিন। তারপর ১৫ দিনে আরও একলাখ মানুষ মারা যান। গত ৪ মে এই সংখ্যাটা আড়াই লাখ ছাড়ায়। আজ ১৩ মে তা তিন লাখের কাছাকাছি।
এই শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয় নভেল করোনাভাইরাস ৪৩ লাখেরও বেশি মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়েছে। প্রাণ হারানোর সংখ্যা ২ লাখ ৯২ হাজার প্রায়; যুক্তরাষ্ট্রেই ৮৩ হাজারের বেশি। সেখানে আক্রান্ত ১৪ লাখ। আক্রান্ত ও মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ধারে কাছে কোনো দেশ নেই।
করোনায় আক্রান্ত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। চীনে প্রাদুর্ভাব শুরু হলেও প্রাণঘাতী ভাইরাসটি ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়তে থাকে। এপ্রিলে এসে ভয়াবহ রূপ নেয় করোনা। মে মাসে একটু কমলেও প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে।
মৃত্যুতে শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্যে ৪০ হাজার ৪৯৬, ইতালিতে ৩০ হাজার ৭৩৯, স্পেনে ২৬ হাজার ৭৪৪, ফ্রান্সে ২৬ হাজার ৬৪৩, ব্রাজিলে ১১ হাজার ৬২৫, বেলজিয়ামে ৮ হাজার ৮০৭, জার্মানিতে ৭ হাজার ৬৬১, ইরানে ৬ হাজার ৬৮৫, নেদারল্যান্ডস ৫ হাজার ৪৫৬ ও কানাডায় মারা গেছে ৪ হাজার ৯৯৩ জন।
তবে লাখো মৃত্যুর খবরের মধ্যে স্বস্তির খবর এটাই যে, কোভিড-১৯ রোগে শনাক্ত হওয়ার পর চিকিৎসা শেষে ইতোমধ্যে ১৫ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ মানুষ এখন সুস্থ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ১০৮টি সম্ভ্যাব্য ভ্যাকসিনের কাজ চলছে। এরমধ্যে আটটি ভ্যাকসিন প্রথম ধাপ অর্থাৎ মানবদেহে প্রয়োগ সম্পন্ন করেছে।
এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোতেই সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখা দিলেও করোনাভাইরাস তার আগ্রাসী রুপ দেখাতে শুরু করেছে এশিয়ায়। ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে। মারা গেছে তেইশ শত মানুষ। প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশগুলোতে।
ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ নয় আক্রান্ত বেড়েছে করোনা প্রতিরোধে সফল মনে করা দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও সিঙ্গাপুরেও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, করোনার নতুন কেন্দ্র হতে পারে এশিয়া। এই অঞ্চলের দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কারণে প্রাণ হারাতে পারেন লাখ লাখ মানুষ।
মাহামরি নভেল করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের উহানে ১ কোটি ১০ লাখ মানুষের বাস। উহানে আবার করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ায় নতুন করে সেখানে তা বিস্তার হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আর তাই আগামী ১০ দিনের মধ্যে সব বাসিন্দাদের করোনা পরীক্ষার ঘোষণা দিয়েছে চীন সরকার।
মহামারির কারণে বিশ্ব বাজার ও পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিভিন্ন দেশের সরকার অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঠেকানোর প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে। আক্রান্ত ও মৃত্যু কিছুটা কমতে শুরু করায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রেও লকডাউন শিথিল হতে শুরু করেছে। সরকারগুলো ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া।
পিবিএ/বিএইচ