করোনা-কালের ডায়েরী ১৪ এপ্রিল ২০২০

শতাব্দী আলম : মাঝে মাঝে কিছু ঘটনা জীবনের অর্থ নতুন করে ভাবায়। গণমাধ্যমকর্মী হিসাবে এমন অনেক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি। তবে করোনা-কালের ডায়েরী সবকিছুকে ছাপিয়ে যাবে।

আমি একদিন পর এই ডায়রী লিখ। ১৩ তারিখ উত্তরা থেকে টঙ্গী যাচ্ছিলাম একটা ভিডিও দৃশ্য ধারন করতে। টেশিসের সামনে একজন বৃদ্ধ রিক্সাচালক খুটে খুটে কিছু তুলছিলেন। আমি বাইক ছুটিয়ে চলেই যাচ্ছিলাম। আবার ঘুরে দাড়াই। নেমে কাছে যেতেই আমার চোখে জ¦ল এসেছে।

‘‘বৃদ্ধ মহাসড়কের উপর ছিটিয়ে থাকা কয়েক দানা মশুর ডাল পাখির ঠোটের মত খুটে তুলছে। কাঁধের গামছাটা বিছিয়ে তাতে বড়জোড় একমুষ্ঠি ডাল হবে। ’’

আমাকে থামতে দেখে যেন লজ্জা পেলেন বয়োবৃদ্ধ রিক্সাচালক। আমি চোখ মুছে নিজেকে সামলে ওয়ালেট বের করি। আমার ওয়ালেটে যা ছিল সবই ওনাকে দিলাম।
বৃদ্ধ এমন কিছুর জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। আমিও কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তড়িৎ বাইকে পা চড়ালাম।
‘বাবা তুমি অনেক উপকার করলা। আল্লায় তোমার ভালো করবো।’’
যেতে যেতে এটুকুই কানে এলো।

আমরা পৃথিবীর উন্নতির জন্য কত কিছু স্বপ্ন দেখি। আসলে না ! মানব জাতি এখনো তার শ্রেষ্ঠত্বের বিচার করতে পারেনি।
তবে কেন একজন পঞ্চাষোর্ধ বৃদ্ধ এভাবে খাবার খুটে নিবে।
করোনা কেবলই মহামারি না। করোনা মহান আল্লাহর সর্তকবানী। যেমন- নমরুদ, ফেরাউন বা সামুদ জাতির ক্ষেত্রে ঘটেছিল।
বর্তমান বিশ^ তার চাইতেও ভয়ানক পরিনতি ভোগ করছিনা কি ? ঔসব ঘটনায় কেবলই একটি নির্দ্দিষ্ট জাতির উপর আজাব এসেছে।

আর বর্তমান বিশে^র প্রতিটি কোনে করোনা মহামারির আজাব।
এ থেকে একমাত্র মহান আল্লাহই পরিত্রাণ দিতে পারেন।

মহামারিতে মানুষের এগিয়ে আসা খাদ্য সহায়তা সবই আমার কাছে মেকি মনে হয়। কারন এ তো অধিকার। নাগরিক হিসাবে এটা তার ন্যায্য পাওনা। তাহলে কেন বার বার সহায়তা বলে জিকির তুলি।
পরিহাস। আমরা শিক্ষা নিচ্ছি না। হে দানবীর ! দরীদ্রের সম্পদ লুট করে তাকেই সহায়তা করছো তুমি।

তোমার জন্য দুইটি বিচার এক. লুটের দুই. উপহাসের। ধন্যবাদ।

পিবিএ/মোআ

আরও পড়ুন...

preload imagepreload image