oro
পিবিএ,পটুয়াখালী: পটুয়াখালী শহরে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৬টি মার্কেটের ক্ষুদ্র ব্যাসায়ীরা করোনা ঝুঁকিতে রয়েছে। পটুয়াখালী শহরের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যকেন্দ্র নিউমার্কেট, পুরান বাজার এবং সদর এলাকা। নিউ মার্কেট এলাকায় ৩০ টির অধিক কাঁচামালের আড়ত রয়েছে। পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শাক সবজি নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা। করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে জনসমাগম কিছুটা কমে এলেও চলছে ট্রাক থেকে সবজি খালাসের কাজ। রাতে আসা ট্রাক থেকে এসব সবজি গুদামে নিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকরা। অথচ এসকল শ্রমিকদের নেই কোন করোনা সুরক্ষা ব্যবস্থা। কোন শ্রমিকের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। অনেক শ্রমিক হ্যান্ড সেনিটাইজার কি এবং কি কাজে ব্যবহার হয় সেটিও জানেন না।
স্থাণীয়রা জানান, শ্রমিকদের মধ্যে নেই সচেতনতা। মাস্ক ব্যবহার করছেন না আড়তদার-শ্রমিকরা। রাস্তায় পড়ে থাকা শাক সবজির উচ্ছিষ্ট পরিষ্কার করা কিংবা জীবানুনাশক ছিটানোর উদ্যোগও নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করলেও সচেতন হচ্ছে না শ্রমিকরা।
এদিকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা স্বাস্থবিধি না মেনেই ব্যবসা পরিচালনা করছেন। শহরের সবুজবাগ, পুরান বাজার, বাধঘাট এলাকায় মুদি এবং চায়ের দোকানে দেখা গেছে লোকজনের ভীড়। চায়ের দোকানে লোকজন দোকানের ভিতরে প্রবেশ করে আড্ডা দিচ্ছে এবং চা খাচ্ছে। জীবানুনাশকের ব্যবস্থা নেই কোন দোকানে। ইতিমধ্যে সবুজবাগ এলাকায় করোনা আক্রান্ত ফার্মেসীর সেলস ম্যান প্রায় ৮ দিন যাবত গ্রাহকদের কাছে ওষুধ বিক্রি করেছেন এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
পটুয়াখালী সবুজবাগ এলাকার একটি চায়ের দোকানদার গত ২৩ এপ্রিল করোনা উপর্সগ নিয়ে মারা যায়। ওই ব্যক্তির স্ত্রীর করোনা উপসর্গ ছিল। তিনি জানান গত ১০ দিন যাবত অসুস্থ ছিলো তার স্বামী। অসুস্থ শরীর নিয়েই দোকানে বসেছেন। করোনা টেস্ট করিয়েছিলেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্থাণীয় জনপ্রতিনিধির সহায়তায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে কিন্তু রিপোর্ট এখনও আসে নি। অথচ চায়ের দোকানদারের মৃত্যুর কিছুদিন পর পার্শ্ববর্তী এক বাসিন্দা করোনা পজিটিভ এসেছে।
ব্যবসায়ী বাবুল জানায়, আমরা জানি না কোন গ্রাহক করোনা আক্রান্ত। পটুয়াখালী সদরে অনেক লোক এখনও ঘোরাফেরা করে যারা করোনা আক্রান্ত। তাদের দেয়া টাকা হাত দিয়ে স্পর্শ করতে হয় প্রতিদিন। এমন পরিস্থিতিতে আমরা কি করবো? জিবানুনাশক স্প্রে ব্যবহারের কথা বললে গ্রহকরা তামাশা করে বলে “ভাই আমি সুস্থ, এসব আমার লাগে না’’
পটুয়াখালী পৌরসভা থেকে জানান, পটুয়াখালী নিউ মার্কেট, সদর রোড এবং সবুজবাগের সকল এলাকায় প্রতিদিন রাতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা আবর্জনা পরিষ্কার করে। সকল খুচরা ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতন করা হচ্ছে নিয়মিত। সকল দোকানে হ্যান্ড সেনিটাইজার এবং জীবানুনাশক রাখার ব্যাপারে বলা হচ্ছে। যারা নিউমার্কেট বাজারে যাচ্ছেন, তাদের জনসমাগম এড়িয়ে চলতে ও মাস্ক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন থেকে জানা গেছে, পটুয়াখালীতে ৪৭১ জন করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রয়েছে প্রায় শতাধিক। আক্রান্তরা অনেকেই হোম কোয়ারেন্টাইন না মেনে ব্যবসা কার্য পরিচালনা করেছেন। এর ফলে তাদের থেকে ক্রেতারাও আক্রান্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহন করে গ্রাহক সেবা দেয়ার জন্য নিয়মিত বলা হয়েছে। শহরের দোকান এবং বিপনীবিতানে যাতে জনসমাগম না হয় সে ব্যাপারে সচেতন করা হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
পিবিএ/সুনান বিন মাহাবুব/এসডি