করোনা মোকাবিলায় গণবিচ্ছিন্ন সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে না: প্রিন্স

পিবিএ,ঢাকা: জনগণের দুঃখ-দুর্দশা মোকাবিলায় সরকার উদাসীন মন্তব্য করে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, সরকার গণবিচ্ছিন্ন বলেই করোনা মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। সরকারের অপরিকল্পিত পদক্ষেপে জনগণ চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পতিত। বিএনপি করোনা মোকাবিলায় এবং একইসাথে লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত ও কর্মহীন মানুষের সহায়তায় সরকারের বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ দাবি করে।

বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।

এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার গত ৫ এপ্রিল ২০২১ থেকে সাত দিনের জন্য দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা দিয়েছে। লকডাউনের দুই দিন অতিবাহিত হয়েছে। কোভিড-১৯ এর ২য় ঢেউ বাংলাদেশে আরো বেশী শক্তি নিয়ে আক্রমণ করেছে। মূলত গত মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ বাড়লেও সরকারের উদাসীনতা ও ব্যর্থতায় তা মোকাবেলায় কোনো কার্যকর ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করে নাই।’

তিনি বলেন, ‘মার্চ এর শুরু থেকে সংক্রমণ বাড়ার সময় হতেই বিশেষজ্ঞ মহল সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে কার্যকর ও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করলেও সরকার মূলত উৎসব আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত থেকেছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) করোনাভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমণের প্রেক্ষিতে স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন এবং দলের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করে সরকারকে উৎসব আয়োজন স্থগিত করে করোনা মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানালেও সরকার সেই আহ্বানে কর্ণপাত করে নাই।

বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা লকডাউন বললেও উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, এটি লকডাউন নয়, কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। লকডাউন নিয়ে সরকারের মধ্যে দুই রকম বক্তব্যে চরম সমন্বয়হীনতারই প্রমাণ মেলে। সরকারের কোন বক্তব্যকে জনগণ বিশ্বাস করবে? যার ফলে মাঠ পর্যায়ে লকডাউন বা নিষেধাজ্ঞা যেটিই বলা হোক না কেন তা কার্যকর হচ্ছে না। কার্যকর করতে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই।

বিএনপির এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘অপরিকল্পিত ও প্রস্তুতিহীন এসকল পদক্ষেপে নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, শ্রমিক-কর্মচারী সকলেই ক্ষুব্ধ এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ় পরিস্থিতিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। দেশব্যাপী বিক্ষোভ করছে ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, হকার, দোকান কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষ। একদিকে করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা, অন্যদিকে আয়-রোজগারের অনিশ্চয়তায় ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দোকান কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ফরিদপুরের সালথায় গত ৫ এপ্রিল বিক্ষোভরত জনতার ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে একজন নিহত ও অসংখ্য মানুষ আহত হন।’

প্রিন্স বলেন, একদিকে সরকার বলছে লকডাউন/নিষেধাজ্ঞায় মিল-কলকারখানা, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি খোলা থাকবে এবং গণপরিবহন, মার্কেট, শপিং মল বন্ধ থাকবে। আবার এর দু’দিন পর সরকার বলছে শুধু সিটি করপোরেশনের ভেতরে গণপরিবহন চলবে, কিন্তু দূরপাল্লা ও উপজেলা থেকে জেলা শহরে গণপরিবহন চলবে না। তাহলে প্রশ্ন-সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী চালু থাকা মিল-কারখানায় শ্রমিক-কর্মচারীরা কিভাবে যাবেন? তাছাড়া সেখানে কি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থবিধি মেনে কাজ করা সম্ভব? শ্রমিক-কর্মচারীদের কি করোনা ঝুঁকিতে পড়ার সম্ভাবনা নেই? অফিস-আদালতে ৫০ শতাংশ লোকবল দিয়ে কাজ করার নির্দেশনা কি আদৌ বাস্তবায়িত হচ্ছে?

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পিবিএ/জেডএইচ

আরও পড়ুন...