কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্প বাস্তবায়নে পুকুর চুরি

 

পিবিএ ,সরাইল ,ব্রাহ্মনবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান প্রকল্পবাস্তবায়নে পুকুর চুরি করা হচ্ছে। আর এ কাজটির সঙ্গে সরাসরি জড়িত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মোঃ সালাউদ্দিন।

উপ-সহকারি প্রকৌশলী সালাউদ্দিন।

আগামি বৃহস্পতিবার নাগাদ এই কর্মসূচির বরাদ্দের সিংহভাগ টাকা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো থেকে উত্তোলন করা হবে বলে একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অথচ এখানকার প্রকল্পগুলোতে হতদরিদ্র শ্রমিকদের দিয়ে কাজই করানো হয়নি।

জানা গেছে, গত ২৭ এপ্রিল এই উপজেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ উদ্বোধন হয়। উপজেলার নয় ইউনিয়নে মোট প্রকল্প ৪৪টি। হতদরিদ্র বেকার শ্রমিক সংখ্যা দুই হাজার দুইশত ছয় জন। এ কাজ চলবে ৪০দিন। প্রত্যেক শ্রমিক ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে দৈনিক মজুরি পাবেন দুইশত টাকা। এতে সরকারি বরাদ্দ এক কোটি ৭৬ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা।
এদিকে এখানে এ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক কাজ শুরুর ১৮দিন পেরিয়ে গেলেও সিংহভাগ প্রকল্পে এখনো কাজ শুরুই করা হয়নি। অথচ বরাদ্দের টাকা উত্তোলনে প্রত্যেক প্রকল্পে শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, এমনটি কাগুজে কলমে দেখানো হচ্ছে। এতে উপ-সহকারি প্রকৌশলী সালাউদ্দিন প্রত্যেক প্রকল্প সভাপতির কাছ থেকে ৪০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিচ্ছেন। যেই প্রকল্পের লোকজন আগে টাকা দিবে, সেই প্রকল্পের বিলের টাকা দ্রুত ও সহজভাবে উত্তোলন হবে।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নে এই কর্মসূচির আওতায় পাঁচটি প্রকল্পে ১৬ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা রবাদ্দ দেওয়া হয়। সেইসব প্রকল্পে প্রতিদিন ২০৬ জন হতদরিদ্র বেকার শ্রমিক কাজ করার কথা। কিন্ত কাজ শুরুর ১৮দিনেও প্রকল্পগুলোতে কোন শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হয়নি। তবে বরাদ্দের টাকা তোলার সুবিধার্থে দু’একটা প্রকল্পে বেকু ক্রেন দিয়ে মাটি কাটা হয়েছে। সেই পাঁচ প্রকল্পের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য ইজ্জত আলী, তাজুল ইসলাম, আব্দুল আলীম, নিয়াশা মিয়া ও নাজমুন নাহার জানান, এখনকার সময়ে দুইশত টাকা মজুরিতে কেউ কাজ করতে চায় না। তাই প্রকল্পে বেকু দিয়েই মাটি কাটা ছাড়া অন্যকোনো উপায় নেই। ইউপি চেয়ারম্যান দ্বীন ইসলাম জানান, এই কর্মসূচির তার ইউনিয়নে পাঁচ প্রকল্পে কোনো কাজই করা হয়নি। তাই বেকু এনে মাটি কাটছে মেম্বাররা।

অপরদিকে সেই এলাকার কর্মসূচির তালিকাভুক্ত কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শ্রমিকেরা কাজে অংশ নেওয়ার আগ্রহ থাকলেও প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের অসহযোগিতার কারণে তারা প্রকল্পকাজে অংশ নিতে পারেননি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপ-সহকারি প্রকৌশলী মোঃ সালাউদ্দিন কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তিনি প্রকল্পের শ্রমিক তালিকা দিতেও অপরাগতা প্রকাশ করেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, কর্মসূচির প্রকল্পে বেকু দিয়ে মাটি কাটার নিয়ম নেই।

পিবিএ/এআই/হক

আরও পড়ুন...