কলাগাছের শহীদ মিনারেই ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানালো দাসিয়ারছড়ারবাসী


পিবিএ,কুড়িগ্রাম: সারা দেশের মতো মহান ২১ শে ফেব্রয়ারি ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে কুড়িগ্রামের বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ারবাসী।

এখানকার নবণির্মিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণের সরকারি সহায়তা না হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে নিজ উদ্যোগে নির্মিত কলাগাছের তৈরি শহীদ মিনারেই তারা ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নানা কর্মসূচী গ্রহণ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। এর মধ্যে কামালপুর মইনুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে সকালে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করণের মধ্য দিয়ে অমর ২১ এর কর্মসূচী শুরু করা হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সমন্বয়ে একটি র‌্যালি প্রদর্শণ করে বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কলা গাছের তৈরি শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধায় পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।

পরবর্তীতে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কামালপুর মইনুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই, সহকারী শিক্ষক হুমায়ুন কবীর, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন প্রমূখ।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারতের ১৬২ ছিটমহলের বাসিন্দাদের দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম ও এসব মানুষের দুঃখ-দূর্দশার তথ্যবহুল সংবাদ গণমাধ্যম কর্মীরা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশের পর ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির বাস্তবায়নের বিষয়টি আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। পরে ২০১৫ সালে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়নে মানবিক দৃঢ়তা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা ও মোদি সরকার।
২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে আবশেষে বিনিময় হয় ভারত-বাংলাদেশের ১৬২ ছিটমহল। এতে করে ৬৮ বছরের বন্দী জীবনের অবসান ঘটে ছিটমহলবাসীর। নাগরিকত্ব মেলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ভারতের ১১১টি ছিটমহলের প্রায় ৩৭ হাজার মানুষের। আর ভারতের নাগরিকত্ব পায় ভারতের অভ্যন্তরে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের ১৪ হাজার মানুষ।

ছিটমহল বিনিময়ের পর থেকে ১৮১ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে ১১১টি ছিটমহলে উন্নয়ন কাজ শুরু করে বাংলাদেশ সরকার। এর মধ্যে শুধু কুড়িগ্রামের দাসিয়ারছড়ার উন্নয়নে ব্যায় করা হয় ৮১ কোটি টাকা। পাশাপাশি াবলুপ্ত ছিটমহলবাসীদের এগিয়ে নিতে কাজ করছে বিভিন্ন বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা।

সর্ববৃহৎ বিলুপ্ত ছিটমহল কুড়িগ্রামের দাসিয়ারছড়ায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২২ কিলোমিটার পাকা সড়ক, ব্রীজ-কালভার্ট, মসজিদ-মন্দির নির্মাণ করা হয়। নিশ্চিত করা হয়েছে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, ভিজিডি, ভিজিএফসহ সরকারী সকল সুযোগ সুবিধা।

কিন্তুসর্ববৃহৎ বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়াছড়ারর ৩ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় একটি মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও প্রতিষ্ঠান গুলোতে পূর্ণাঙ্গ শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কলাগাছের তৈরি শহীদ মিনারেই একমাত্র ভরসা করতে হচ্ছে।

পিবিএ/ইউএ/এমএসএম

আরও পড়ুন...