কলাপাড়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ, হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে নতুন নতুন রোগী

উত্তম কুমার হাওলাদার, পিবিএ, কলাপাড়া(পটুয়াখালী) : ভ্যাপসা গরমের কারণে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ডায়রিয়া প্রকোপ বেড়ে গেছে। বৈদ্যুতিক পাখার বাতাসেও স্বাস্তি মিলছেনা। রোগীর স্বজনরা অনবরত হাত পাখা নাড়িয়ে বাতাস করছেন। ভ্যাপসা গরমের সাধারণ মানুষই দিশেহারা। গত এক সপ্তাহে শতাধিক রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। আবার অনেকেই বর্হিবিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বৃদ্ধ-শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ। প্রতিদিনই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত নতুন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এছাড়া দিনে দিনে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ৫০ শয্যা হাসপাতালে দেখা দিয়েছে সিট সঙ্কট। এর ফলে অনেক রোগীদের মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। তবে ঔষধ সরবারহ না থাকায় স্বজনরা বাহির থেকে ঔষধ কিনে রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছেন বলে এমন আভিযোগ রয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তীব্র গরমে ডায়রিয়া জনিত কারণে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সাইফুল (৩৫), মোকসেদুল (২৮),আব্দুল রহিম (১৭), চৈতি (১১), তাসিন (১),সামিরা (৯) ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এছাড়া ৪ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল এক সপ্তাহে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ ও শিশু ৬৯ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তবে স্বজনদের অভিযোগ সব ঔষধ বাহির থেকে ক্রয় করে রোগীদের চিকিৎসা করাতে হচ্ছে।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, ওয়ার্ডের সকল সিটে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে রোগীরা। এদিকে হাসপাতালে সিট সঙ্কটের কারনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু তাসিন (১) মায়ের কোলে কাতরাচ্ছে। মা নাজমা বেগম বলেন, তার সন্তান ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এসেছেন। সিট না পেয়ে মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতাল থেকে কোন ঔষধ দেয়া হয়নি। বাহির থেকে সব ঔষধ ক্রয় করে তার সন্তানকে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে।
ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু চৈতির পিতা জয়দেব জানান, হাসপাতালে রোগীর চাপ বেশি। তাই সিট না পেয়ে বাধ্য হয়ে তীব্র গরম সহ্য করে মেঝে শুইয়ে তার কন্যার চিকিৎসা করাচ্ছেন।

হাসপাতালে ভারপ্রাপ্ত ষ্টোরকিপার আবু তাহের জানান, রোগীদের চাপ থাকে বেশী তাই ঔষধ সঙ্কট দেখা দেয়। তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চাহিদা পাঠানো হয়েছে বলে।
নার্সিং সুপার ভাইজার ফৌজিয়া খানম জানান, পার্শ্ববর্তী আমতলী ও তালতালী উপজেলার কিছু সংখ্যক রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে। এ কারনে রোগীর চাপ বেশি। এছাড়া ৫০ বেডের হাসপাতালে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ৬৯ জন ভর্তি রয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার চিন্মময় হাওলাাদার জনান, এখন পর্যন্ত মারাত্মক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগি আসেনি। যারা এসেছে তাদের চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। তবে রোগীর সংখ্যা বেশি থাকায় মাঝে মধ্যে ঔষধ সঙ্কট থাকে বলে তিনি জানিয়েছেন।

পিবিএ/উএ/জেডআই

আরও পড়ুন...