কষ্টি পাথরের মূর্তি নিয়ে উধাও দু’সহোদর

পিবিএ ডেস্ক: ঠাকুরগাঁওয়ে পুকুর থেকে মাটি কাটার সময় একটি কষ্টি পাথরের মূর্তি পাওয়া গেছে। এ মূর্তি নিয়ে রীতিমত তুলকালাম কান্ড বেধেছে। কর্মরত শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে। এদিকে কষ্টি পাথরের মূর্তিটি ভারতে পাচার করে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য দু’সহোদর ভাই এখন লা পাত্তা। পুলিশ কয়েক দফা অভিযান চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছে।

জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ২০ নং রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের কশালগাঁও গ্রামের ছবিলালের ২ ছেলে পশুরাম ও জতিন কাকাত ভাই ধীরেনের মাহিন্দ্র গাড়ি নিয়ে মঙ্গলবার আখানগর ইউনিয়নের ভেলারহাট গুচ্ছ গ্রামের পুকুরে মাটি কাটতে যান। ৫-৬ ট্রিপ মাটি কাটার সময় দুপুর ১টার দিকে তাদের কোদালে একটি কালো রঙের পাথর সদৃশ বস্তু লাগলে তারা তৎক্ষনাৎ মাটি কাটা বাদ দিয়ে পাথরের মুর্তি নিয়ে সটকে পড়ার চেষ্টা করেন।

ভেলাহাট গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী আছিয়া বেগম সেটিকে মুল্যবান বস্তু দাবি করে নিতে চাইলে পরশুরাম ও তার ভাই পূজা করার কথা বলে সেটি নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। তারা গাড়ির মালিক কাকাত ভাই ধীরেনের বাড়িতে চলে যান।

কষ্টি পাথরের মূর্তি নিয়ে উধাও দু’সহোদর

বাড়ির লোকজন সেটি পানিতে পরিষ্কার করে কষ্টি পাথরের মূর্তি বুঝতে পেরে পরশুরাম ও তার ভাই জতিন নিজ হেফাজতে নিয়ে নেয়। গাড়ির আরেক শ্রমিক সেটি নিতে চেয়ে না পেয়ে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে নেয় এবং বিভিন্ন জনকে দেখালে সেটি কষ্টি পাথরের মুর্তি বলে সবাই চিহ্নিত করে।

এদিকে খবর পেয়ে রুহিয়া থানা পুলিশ মঙ্গলবার রাতে পরশুরাম গং এবং গাড়ির মালিক ধীরেনের বাড়িতে অভিযান চালালে পরশুরাম ভ্রাতাদ্বয় মুর্তি নিয়ে গা ঢাকা দেয়। গাড়ির চালক ইসমাইল হোসেন জানান, কালো রঙের মুর্তিটি তিনি মাটি লাগানো অবস্থায় দেখেছেন। সেটির ওজন প্রায় ৫-৭ কেজি হবে।

প্রত্যক্ষদর্শী আমিরুল ইসলাম জানান, উদ্ধারকৃত মূর্তিটির দাম প্রায় ২ কোটি টাকা। ওই মুর্তিটি পাওয়ার সময় যেহেতু তিনিও ছিলেন সেটি পাওয়ার জন্য তিনি বুধবার সকালে পরশুরামকে খোজার জন্য তাদের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাননি। পরে পরশুরামকে পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার বালিয়া সীমান্ত এলাকায় খুঁজে পেয়ে তাকে ধরে নিয়ে আসলেও তিনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার কথা বলে পুনরায় গা ঢাকা দেন।

বুধবার সকালে পরশুরামের বাড়িতে গিয়ে তাদের দু’ভাইকে পাওয়া যায়নি। তার পিতা ছবিলাল বর্মন, তাদের মা এবং পরশুরামের স্ত্রী জানায়, মঙ্গলবার রাতে তারা দু’ভাই বাড়িতে ফেরেনি। এ নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী, মাহিন্দ্র গাড়ির মালিক ধীরেন ও শ্রমিক সহ স্থানীয় জনমনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়দের দাবি উদ্ধারকৃত কষ্টি পাথরের মূর্তিটি পরশুরাম ভ্রাতাদ্বয় ভারতে পাচার করে নিজেরা লাভবান হতে পারে। কাজেই সেটি উদ্ধার করে সরকারি কোষাগারে জমা করা হোক।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হোসেন বলেন, পরশুরামের সঙ্গে আমার ফোনে একাধিকবার কথা হয়েছে। সে মূর্তিটি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে। তবে সে বর্তমানে তার মামা বাড়ি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার লাহিড়ী এলাকায় আত্বগোপন করে আছে বলে আমার বিশ্বাস।

এ ব্যাপারে রুহিয়া থানার ওসি তদন্ত বাবুল কুমার রায় বলেন, কষ্টি পাথরের মূর্তিটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। স্থানীয়রা জানায়, পরশুরামের এক ভাই ভারতে থাকে। কাজেই ওই মূর্তিটি নিয়ে তারাও ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারে।

পিবিএ/আরআই

আরও পড়ুন...