রাজন্য রুহানি,পিবিএ,জামালপুর : সাংবাদিক শেলু আকন্দকে নির্মমভাবে পিটিয়ে দুই পা ভেঙে দেয়ার প্রধান হোতা পৌর কাউন্সিলর হাসানুজ্জামান খান রুনুকে কাউন্সিলর থেকে অপসারণ ও মামলার আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে জামালপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সাংবাদিকরা।
জামালপুর প্রেসক্লাব আয়োজিত এ বিক্ষোভ সমাবেশ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় শহরের দয়াময়ী মোড় থেকে বের হয়ে জামালপুর পৌরসভায় গিয়ে শেষ হয়। জামালপুর পৌরসভার সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে পৌর মেয়রের কাছে স্মারকলিপি দেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি চ্যানেল আইয়ের সাংবাদিক হাফিজ রায়হান সাদা ও সাধারণ সম্পাদক এটিএন বাংলার সাংবাদিক লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, দেওয়ানপাড়ার মৃত হুরমুজ আলী খানের ছেলে জামালপুর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসানুজ্জামান খান রুনু (৫৫) একজন গুন্ডা ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির। এক সময়ের কসাই থেকে বর্তমানে ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত। জামালপুর সদর সাব রেজিস্টার অফিসের স্ট্যাম্প ভেন্ডার হবার সুবাধে ভুয়া জমা-খারিজ ও পর্চা তৈরি করে বানোয়াট দলিল সম্পাদনের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২৮ মে দুপুর ২টায় দৈনিক কালের কন্ঠের সাংবাদিক ভুয়া জমা-খারিজ ও পর্চা তৈরি করে বানোয়াট দলিল সম্পাদনের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে কাউন্সিলর হাসানুজ্জামান খান রুনুর নির্দেশে ওই সাংবাদিককে মারধর করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর ৭৭। মামলা করার পর সাংবাদিকদের হুমকি দেয় রুনু খানসহ তার লোকজন। আসামিরা প্রকাশ্যে হুমকি দেয়ায় নিরাপত্তার জন্য জামালপুর থানায় জিডি করেন জামালপুরের ৪৮জন সাংবাদিক। সাংবাদিকদের গণজিডির বিষয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিটি হলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি প্রশাসন। ওই সাংবাদিকের মামলায় শেলু আকন্দ ছিলেন অন্যতম সাক্ষী। মামলার সাক্ষী হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে রুনু খানের নির্দেশে ১৮ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে শহরের ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে বাইপাস সড়কে সাংবাদিক শেলু আকন্দকে লোহার রড, হাঁতুড়ি ও শাবল দিয়ে নৃশংসভাবে পিটিয়ে দুই পা ভেঙে দেয় সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে সাংবাদিক শেলু আকন্দ ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় দুই আসামি রুনু খানের ছেলে জেলা ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রাকিব খান ও তুষার খানকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রইয়ে গেছে বাকি আসামিরা। রাকিব খানকে ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার ও রুনু খানকে শহর আওয়ামী লীগ থেকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বহিস্কারসহ কাউন্সিলর থেকে অপসারণ করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন সাংবাদিকরা।
পিবিএ/আরআর/ জেডআই