কাজে যেতে অনিহা প্রকাশ: সহকর্মী খুনের আসামী গ্রেফতার

পিবিএ,ঢাকা: নারায়ণগঞ্জে কাজে যেতে অনিহা প্রকাশ করার মত তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সহকর্মীর এলোপাতাড়ি মারধরে আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করে আ. করিম (৫৮)। এ ঘটনায় আসামীকে গ্রেফতারে করে সিআইডি।

বুধবার(১৯ জানুয়ারি) সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খায়রুল আমিন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ৫ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ব্রহ্মন্দী ষাড়পাড়া গ্রামে একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সহকর্মীর এলোপাতাড়ি মারপিটে আ. করিমের মৃত্যু হয়।

তিনি আরও বলেন, ওই দিন সকাল ৭টায় আ. করিমের সহকর্মী রংমিস্ত্রি মনির হোসেন আ. করিমের বাড়ীতে এসে তাকে কাজে যাওয়ার জন্য বলে। কিন্তু আ. করিম তাকে জানান যে, সে আজকে তার সাথে কাজে যেতে পারবে না। মনির হোসেনের সাথে কাজে যেতে অনিহা প্রকাশ করার সাথে সাথে মনির হোসেন তার সহকর্মী আ. করিমকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে গুরুতর আহত করে মাটিতে ফেলে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। আ. করিমের ডাক চিৎকারে তার পরিবারের সদস্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত নিকটস্থ জোবেদ আলী মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য দিলে তারা পরীক্ষার টাকা সংগ্রহ করার জন্য ভিক্টিমকে বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে নেওয়ার কিছুক্ষণ পরই আ. করিম আঘাতজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করে।

ওই ঘটনায় ভিকটিম আ. করিমের স্ত্রী মোসা. নারগীছ (৪৮) মো. মনির (৩০) এর বিরুদ্ধে মামলা করলে ঘটনাটি বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।

ওই ঘটনায় বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার পাশাপাশি সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার, মুক্তা ধর পিপিএম এর সার্বিক নির্দেশনায় সিআইডির এলআইসি শাখা ছায়া তদন্ত শুরু করে। উক্ত হত্যার ঘটনাটি শুধুমাত্র কাজে যেতে অনিহায় প্রকাশ করাতেই সংগঠিত হয়েছে নাকী পারিবারিক/ব্যবসায়িক পূর্ব কোন বিরোধ ছিল এবং উক্ত হত্যাটি পূর্ব পরিকল্পিত কীনা ইত্যাদি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর ভিকটিমের পরিবার, ঘটনাস্থল ও আশপাশ এলাকার বিভিন্ন উৎস হতে সরেজমিনে সংগ্রহ করা হয়।

পরবর্তীতে আসামীকে গ্রেফতারের জন্য সম্ভাব্য সকল স্থানে গ্রেফতারী অভিযান পরিচালনা করে এলআইসির একটি চৌকস টীম শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট থেকে ১৮ জানুয়ারি রাতে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানায়, প্রায় ৮ বছর যাবৎ আঃ করিম ঢাকা, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে রংমিস্ত্রির কাজ করে আসছিল। তার সাথে প্রায় ৪ বছর যাবৎ কাজের সুবাদে মো. মনিরের পরিচয় হলে সে আ. করিমের সহকারী হিসেবে কাজ করতো। তাদের উভয়ের মধ্যে কাজের মজুরিসহ বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে মনোমালিন্য দেখা দেয়।

আ. করিমের জন্য দৈনিক হাজিরা ৪’শ টাকা এবং সহকারী হিসেবে মো. মনির তার জন্য দৈনিক হাজিরা ৫’শ টাকার নতুন একটি কাজ সে ঠিক করে আ. করিমকে জানায়। আ. করিম হেড মিস্ত্রী এবং তার যন্ত্রপাতি দিয়েই মূলতঃ ঠিকাদারীর কাজ করা হয়। তবু তার দৈনিক হাজিরা কম বিধায় সে মনিরের সাথে কাজে যেতে অস্বীকৃতি জানান। তখন মনির হোসেন উত্তেজিত হয়ে তার সাথে কাজে যেতে অনিহা প্রকাশ করার কারণেই আ. করিমকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে গুরুতর আহত করে মাটিতে ফেলে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় এবং উক্ত আঘাতের কারণেই তার মৃত্যু হয়।

পিবিএ/জেডএইচ

আরও পড়ুন...