কারেন্ট সুদে জড়িয়ে মানুষ ফতুর

পিবিএ,ঝিনাইদহ: জেলার হরিণাকুন্ডুর পান ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম দাদন (সুদ) ব্যবসয়ীর কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন ভাল ভাবে ব্যবসা করার জন্য। ৬ মাসে তিনি পরিশোধও করেছেন ৩৬ হাজার টাকা। এখন কারেন্ট সুদের জালে জড়িয়ে তার দেনা দাড়িয়েছে চার লাখে। ৪০ হাজার টাকায় ৬ মাসে তার সুদ দাড়িয়েছে চার লাখে। গল্পটি গুজব মনে হলেও বাস্তবে সুদে কারবারীর অত্যাচারে রবিউল এখন দিশেহারা। এ রকম শত শত মানুষ হরিণাকুন্ডুর বিভিন্ন গ্রামে দাদন ব্যবসায়ীর ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে। হারাচ্ছেন ভিটে, বাড়ি আর সাজানো সংসার। প্রশাসিনক কোন পদক্ষেপ না থাকায় দিনকে দিন হরিণাকুন্ডুসহ সারা জেলায় সুদ কারবারীদের দাপন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে শিক্ষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দিনমজুরসহ সাধারণ মানুষ। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, হরিণাকুণ্ডুর পৌরসভা এলাকার শুড়া ও হাসপাতালমোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় দাদন ব্যবসা এখন জমজমাট। শিক্ষক, হোটেল, ক্ষুদ্র ব্যবসা, দিনমজুর, ভ্যান ও রিকশা চালকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ সংসার চালাতে গিয়ে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। পার্বতিপুর গ্রামের বদর উদ্দীনের ছেলে রবিউল ইসলাম এ রকম অসহায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন। তিনি শুড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে দাদন ব্যবসায়ি মিঠুর কাছ থেকে ৬ মাস আগে ৪০ হাজার টাকা নেন। এপর্যন্ত তিনি ৩৬ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন। কিন্তু দাদন ব্যবসায়ী মিটুর খাতায় বকেয়া রয়েছে ৪ লাখ টাকা। এই টাকার জন্য সুদখোর মিঠু প্রতিনিয়ত চাপ দিচ্ছে। না হলে মামলা করবেন। নারায়নকান্দি গ্রামের স্কুল শিক্ষক আলমগীর হোসেন জানান, তিনি ্করোনাকালে অভাবের তাড়নায় মিঠুর কাছ থেকে ৩ মাস আগে ২০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। ১৫ হাজার টাকা পরিশোধও করেছেন। এখনও মিঠু ৫০ হাজার টাকা দাবী করছে। পোলতাডাংগা গ্রামের স্কুল শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাকও এমন অভিযোগ করেন মিঠুর বিরুদ্ধে। আব্দুর রাজ্জাক ২৫ হাজার টাকা নিয়ে ৭৫ হাজার টাকা পরিােধ করলেও মিটুর খাতায় বয়েকা আছে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা। টাকার জন্য সুদখোর মিঠু মিথ্যা মামলা দেওয়ার হুমকী দিচ্ছে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে দাদন ব্যবসায়ি মিঠু নিজের ভুল স্বীকার করে বলেন, ভাই এসব নিয়ে লেখালেখি দরকার নেই। আমাকে একটু সময় দেন মানুষের কাছে যা টাকা পড়ে আছে সেগুলো তুলে নিয়ে আর সুদের ব্যবসা করবো না। হরিণাকুণ্ডু থানার পরিদর্শক ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, ভুক্তভোগীরা এব্যাপারে থানায় অভিযোগ দিলে আমি ব্যবস্থা নেব। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নাফিস সুলতানা বলেন, অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিবিএ/আতিকুর রহমান/এসডি

আরও পড়ুন...