হিমাগার থেকে কম আলু বের হওয়ায় দাম বৃদ্ধি

কালাইয়ে আগাম জাতের আলু চাষ করতে পারেনি কৃষক

বাবুল হোসেন,জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ আলু উৎপাদন এবং সংরক্ষণে দেশের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কালাই উপজেলা। আর তাই এ উপজেলার প্রবাদ আছে “আলু আর ধান কালাই এর প্রাণ”। বর্তমানে কালাই উপজেলার হিমাগারগুলোতে খাবার আলুর মজুদ তলানিতে এসে পৌঁছেছে। ফলে গত কয়েকদিনে আলুর বাজার বৃদ্ধি পেয়েছে। হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আলু আমদানি শুরু হলেও বর্তমানে কালাই উপজেলায় এখনো এর প্রভাব পড়েনি।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) উপজেলার বিভিন্ন হিমাগারে ঘুরে আলু ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে জানা যায়, এখনো হিমাগার গুলিতে ৩২শ’ টাকা দরে ষ্টিক আলু বিক্রি হচ্ছে। এ বছর অতিবৃষ্টির কারণে আগাম জাতের আলু কৃষকরা উৎপাদন করতে পারেনি।

অপরদিকে হিমাগার গুলিতেও তেমন আলু না থাকায় দাম অনেকটা বেড়েছে। দাম বাড়ার কথা শুনে কৃষকদের যতটুকু আলু হিমাগারে আছে তা আর বিক্রি করছে না। যার ফলে বাজারে দাম একটু বৃদ্ধি পেয়েছে।

কালাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালাই উপজেলায় এবার চলতি রবি মৌসুমে ১১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গত বছর ১০ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়। উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ১৭ হাজার ৮৯ মেট্রিকটন আলু। উপজেলার ১১টি হিমাগারের ধারণ ক্ষমতা ১লাখ ১৩ হাজার ১০০ মেট্রিকটন। মজুদ করা হয়েছিল ১ লাখ ১২ হাজার ১১৩ মেট্রিকটন। কালাই উপজেলা হতে প্রতিমাসে ১৫ থেকে ১৬ হাজার মেট্রিকটন খাবার আলু দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে কালাই উপজেলার ১১টি হিমাগারে খাবার আলুর মজুদ রয়েছে মাত্র ৯ হাজার মেট্রিকটন অপরদিকে বীজআলু রয়েছে ১৪ হাজার মেট্রিকটন। এখন যে পরিমাণ খাবার আলু মজুদ আছে তা দিয়ে দেশের বিভিন্ন বাজারের চাহিদা মোতাবেক ১৫ থেকে ২০ দিনের চাহিদা যোগান দিতে পারবে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে নতুন জাতের আলু বাজারে আসতে এখনো প্রায় দেড় মাসের মত সময় লাগবে।

কৃষকরা জানান, তাদের আলু তেমন হিমাগার গুলিতে নেই। আছে ব্যবসায়ীদের আলু। তারা আরো বেশি দাম পাওয়ার আশায় আলু বাজারে ছাড়ছে না। কৃষকরা আরো জানান, গতবছর এই সময়ে তাদের লাগানো আগাম জাতের আলুর বয়স হয়েছিল ১০ থেকে ১২ দিনের মত। আকাশের অবস্থা ভালো না থাকায় অতিবৃষ্টির কারণে জমির পাকা ধান ঘরে তুলতে পারছেনা। এ কারণে কৃষকরা তাদের জমিতে আগাম জাতের আলু লাগাতে না পারায় এবার নতুন আলু উৎপাদন থেকে বঞ্চিত।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, দুই থেকে আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এবার রবি মৌসুমের শুরুতেই বৃষ্টির কারণে আগাম জাতের আলু চাষে কৃষকের সমস্যা হচ্ছে। আশা করছি কিছু দিনের মধ্যেই কৃষকরা ধান কেটে আগাম জাতের আলু চাষ করতে পারবে। সেক্ষেত্রে নতুন জাতের আলু বাজারে আসতে এখনো প্রায় দেড় মাসের মত সময় লাগবে। ফলে হিমাগারে যেসব মজুদদার ব্যবসায়ী ও কৃষক আলু রেখেছেন তারা মজুদ কম এর কারণে ধীর গতিতে বাজারে আলু ছাড়লে দাম বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামিমা আক্তার জাহান বলেন, খাবার আলুর মজুদ কম, এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা কেউ যেন অতিরিক্ত কৃত্রিম সংকট তৈরী করে আলুর দাম বৃদ্ধি করতে না পারে সে ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বদ্ধ পরিকর।

আরও পড়ুন...