মো:জাকির হোসেন, পিবিএ,সৈয়দপুর: নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে উপজেলা নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছোট ভাইয়ের ধাক্কায় বড় ভাই আওয়ামী লীগ নেতা তপন কুমার সরকার (৭০) মারা গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তপন কুমার সরকার নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। তার আপন ছোট ভাই বিপ্লব কুমার সরকার দিপু একই উপজেলার আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রোববার রাত আটটার দিকে বাহাগিলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের হাটে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নৌকার প্রার্থী জাকির হোসেন বাবুলের প্রচারণায় ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি তপন কুমার সরকার। এসময় তাঁর আপন ছোট ভাই আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং একই উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি বিপ্লব কুমার সরকার দিপু সেখানে গিয়ে তার বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারণায় নামার কারণ জানতে চান বড় ভাই তপন কুমারের কাছে। এতে দুই ভাই বিপ্লব কুমার ও তপন কুমারের বচশা এবং তারপর ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এতে তপন কুমার অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাহাগিলি ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান শাহ্ দুলু অভিযোগ করে বলেন,‘ রোববার রাত আটটার দিকে তপন কুমার সরকারসহ আমরা বাহাগিলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের হাট এলাকায় নৌকার পক্ষে মাইকোবাসে যোগে প্রচারনা চালাচ্ছিলাম। এ সময় সেখানে তপন কুমার সরকারের আপন ছোট ভাই আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রাথী বিপ্লব কুমার সরকার দিপু এবং তাঁর মোটর সাইকেল প্রতীকের সমর্থকদের নিয়ে আমাদের মাইক্রোবাস প্রতিরোধ করে। এক পর্যায়ে তপন কুমারকে মাইক্রোবাস থেকে জোর পূর্বক নামিয়ে নিয়ে কেন তার পক্ষে প্রচারনা না করে নৌকার পক্ষে প্রচারনায় অংশ নিয়েছেন বলে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে বিপ্লব কুমার বড় ভাই তপনের শরীরে কিল ঘুষি মারলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আমরা আহত তপন কুমার সরকারকে দ্রুত উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরী বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। তিনি দাবি করে বলেন ছোট ভাইয়ের কিলঘুষির আঘাতেই মারা যায় তপন কুমার সরকার।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নিহতের ছোট ভাই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী বিপ্লব কুমার সরকার দিপু। তিনি দাবি করে বলেন,‘ আমার বড় ভাই তপন কুমার সরকার ডায়াবেটিস ও হৃদ রোগের রোগী। নৌকা প্রতীকের লোকজন তাকে বাড়ি থেকে জোর করে নির্বাচনী প্রচারণায় নিয়ে আসেন চেয়ারম্যানের হাটে। আমরা ধারণা সে নির্বাচনী প্রচারনায় থাকা অবস্থায় অসুস্থ্য হয়ে পরেছেন সময়মত হাসপাতালে না নেওয়ার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আমার সাথে তার কোন বচসা কিংবা ধাক্কা ধাক্কির ঘটনা ঘটেনি। অথচ আমার প্রতিপক্ষরা ফায়দা লুটার অপচেষ্টা করছে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সুজা শরীফ জেমস বলেন.‘ তপন কুমার সরকারকে চিকিৎসা দেওয়ার কোন সুযোগ পায়নি, কারণ তাকে মৃত অবস্থায় লোকজন হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসনে। তবে তার শরীরে কোথাও কোন আঘাতের চিহৃ পাওয়া যায়নি।’ কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ হারুন অর রশিদ জানান, লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। পোষ্টমর্টোম রিপোট না আসা পর্যন্ত কোন কিছু বলা সম্ভব নয়। এখন পরিবার পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
পিবিএ/জেএইচএস/এইচএইচ