কুবিতে ফের ছাত্রলীগের হাতে মারধরের শিকার সাংবাদিক

পিবিএ,কুবি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও এক সাংবাদিককে পেটালেন শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শনিবার রাত ১১ টার দিকে আবাসিক হলের নিজ কক্ষেই মারধরের শিকার হয় এ সাংবাদিক। এর আগেও বিভিন্ন সময় শাখা ছাত্রলীগের মারধর ও হুমকির শিকার হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা। এদিকে আহত সাংবাদিক হামলার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ঘটনাসূত্রে জানা যায়, শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের নিজ কক্ষে (২০৪ নং) হামলার শিকার হন সজিব বণিক। আহত সজীব বণিক বিশ^বিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি দৈনিক বিজনেস বাংলাদেশ পত্রিকার কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয় প্রতিনিধি এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) সদস্য। পরে রাত ১টার দিকে আহত ওই সাংবাদিককে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে শহীদ ধীরেন্দনাথ দত্ত হলের ২০৪ নম্বর কক্ষে সিট নিয়ে কথা বলার সময় এক পর্যায়ে সাংবাদিক সজীব বণিকের জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কর্মী রাজু আহমেদ। এ সময় ওই সাংবাদিক এর প্রতিবাদ করলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদস্য ও হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মিরাজ খলিফা, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ইমতিয়াজ শাহরিয়ার, ছাত্রলীগ কর্মী রাজু আহমেদ, শাখা ছাত্রলীগের উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মুনতাসির হৃদয়, ছাত্রলীগ কর্মী মুক্তার হোসাইনসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী রড-লাঠি দিয়ে সাংবাদিক সজীবকে মারধর করে।

আহত সজীব বণিক বলেন, ‘ওরা আমার কক্ষে রড, লাঠিসোটা নিয়ে ঢুকে আমাকে মারধর করে। তারা পেটানোর সময় আমাকে এবং সাংবাদিকদেও নিয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।

তিনি আরও বলেন,‘মারধর ও পেটানোর এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ শাহরিয়ার আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে ও মেরে ফেলতে অন্যদের নির্দেশ দেয়। এমতাবস্থায় আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ফোন করলে তারা এসে আমাকে হল থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার অবস্থা খারাপ দেখে মেডিকেলে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেয়। এমতাবস্থায় আমি চরমভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ওরা আমাকে প্রাণনাশেরও হুমকি প্রদান করে।

এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলেও অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ‘কারো গায়ে হাত তোলা চরম বেয়াদবি। কাউকে মারধর করা আমি কোনোভাবেই সমর্থন করি না। যারা সাংবাদিককে মারধর করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন,‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমি বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন,‘আমার অফিসে অভিযোগপত্র দিতে বলেছি। আমরা হল প্রশাসনের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেব। শহীদ ধীরেন্দনাথ দত্ত হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ জুলহাস মিয়া বলেন,‘আমি অভিযোগপত্র পেয়েছি। হলের সকল শিক্ষকদের নিয়ে বসে ব্যবস্থা নেব।

পিবিএ/জাহিদুল ইসলাম/বিএইচ

আরও পড়ুন...