কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া চিকিৎসা দিতে হিমসিম খাচ্ছে ডাক্তাররা

পিবিএ,কুষ্টিয়া: তাপদাহ আর ভ্যাবসা গরমের কারনে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে রোটা ভাইরাস জনিত ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ। কুষ্টিয়া জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গড়ে তিনগুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন প্রতিদিন। পরবর্তিতে তারা রেফার্ড হয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এভাবেই আশপাশের জেলা মিলিয়ে রোগীর পরিমান হচ্ছে ৬ গুন।

এমন বিপুল সংখ্যক ডায়রিয়াই আক্রান্ত রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসকদের। সেই সাথে ৮নং ওয়ার্ডে রোগীর দীর্ঘ লাইন তবুও ডাঃ নদী রোগী দেখেন যত্ন সহকারে সহকারী সহ ৪ জন মিলে প্রায় ১৫০০ রোগী দেখেন ডাঃ নদী। ক্লান্তি থাকলেও বুঝতে দেননা তারপরও রোগী দেখেন যত্ন সহকারে। তিনি জানিয়েছেন মহত পেশায় মহত মন না থাকলে কেনো এ পেশায় আসলাম রোগীরা ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকি।

তাপদাহ আর ভ্যাবসা গরমের কারনে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে রোটা ভাইরাস জনিত ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ
ঠাঁই নেই হাসপাতালের বেডে

প্রতিদিন সেখানে ভর্তি হচ্ছেন ৫০ থেকে ৭০ জন আক্রান্ত শিশু ও বয়স্ক রোগীরা, এছাড়াও চিকিৎসা নিতে ৬ টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও কনসালটেশন সেন্টারেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা স্বাস্থ্য সেবা নিতে ছুটে আসছেন। এদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশু ও বয়স্ক রোগী রয়েছে। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় ওয়ার্ডে জায়গার সংকুলান না থাকায় মেঝেতে জায়গা দিয়ে তাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বৈরি আবহাওয়া ও প্রখর রোদ, ধুলোবালির পাশাপাশি অপরিষ্কার,অপরিচ্ছন্নতা,ভ্যাপসা গরমের কারণে রোটা নামক ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেশি ঘটে। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে কুষ্টিয়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যাদের মধ্যে এক থেকে পাঁচ বছর বয়সের শিশুর সংখ্যায় বেশী। এই রোগে আক্রান্তদের প্রথমে জ¦র আসে তারপর তাদের একাধিকবার বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়, তবে ভয়ের কোন কারণ নেই হাসপাতালে ভর্তির পর রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা ৭-৮ দিন চিকিৎসা নেয়ার পর তারা সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়ছেন।

সদর উপজেলার থানাপাড়ার লাবনি বলেন ,আমার শিশুর (১২ মাস) পাতলা পায়খানা ও বমি বন্ধ হয়েছে তাই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি,এখন ভালো আছে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডাঃ তাপস কুমার সরকার জানান, রোটা ভাইরাস সংক্রান্ত ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব ঘটেছে আবহাওয়ার তারতম্যের পাশাপাশি অপরিস্কার অপরিচ্ছন্নতা, প্রচন্ড তাপদাহ আর ভ্যপসা গরমের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় মানুষের খাওয়ার জন্য বিশুদ্ধ পানির সংকট থেকে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যায় ব্যাপক হারে।

বছরের এ সময়টা আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে রোটা ভাইরাসের জন্য সহায়ক হিসেবে কাজ করে। যা অস্বাস্থ্যকর খাবার ও দুষিত পানির মাধ্যমে মানুষের দেহে প্রবেশ করে এ রোগের সৃষ্টি করে। কুষ্টিয়া জেলার সিভিল সার্জন রওশন আরা খানম বলেন, অন্য সময়ের চেয়ে রোটা ভাইরাসের প্রকোপ বর্তমানে কিছুটা বেড়েছে। গোটা জেলাসহ আশ-পাশের বিভিন্ন জেলার আক্রান্ত রোগীরা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসার কারণে এর সংখ্যা বেশি মনে হচ্ছে।

পিবিএ/কেএস/আরআই

আরও পড়ুন...