কুড়িগ্রামে নারীকেল ও সুপারি ফলন বিপর্যয়

পিবিএ,কুড়িগ্রাম: শোনরে বাপু চাষার পো সুপারি বাগে মান্দার রো, সুপারিতে গোবর বাঁশে মাটি অফলা নারিকেলে শিকড় কাটি, সুপরি বলে আমি ধরতে বেশ জানি যদি না পাই জাতের পানি, তিন নাড়ায় সুপারি সোনা ’এগুলো খনার বচন।
বচন গুলোতে বিভিন্ন ভাবে সুপারি নারিকেল চাষের কথা বলা হয়েছে।গত বছরের তুলনায় কুড়িগ্রামের রাজীবপুর ও রৌমারী উপজেলায় বসতবাড়ী ও বাগানের সুপারি ও নারিকেল গাছে এবার অধিক হারে ফল ঝরে পড়া রোগ দেখা দিয়েছে।কৃষি বিভাগ বলছে জলবায়ু পরিবর্তন ও আবহাওয়া জনিত কারনে এবার ফুল ও ফল ঝরে পড়ার প্রবণতা বেশি। শুধু সুপারি নয় নারিকেল গাছেও এবার অধিকহারে ফল ঝরে পড়ছে।

 

সরেজমিন রাজীবপুর উপজেলার মিয়াপাড়া গ্রামে গিয়ে কথা হয় কৃষক ফুল মিয়ার(৫০) সাথে নিজের ২ বিঘা জমিতে করা সুপারি বাগানে দাড়িয়ে আছে।বাগানে গিয়েই দেখা যায় তার হাতে ঝরে পরা সুপারি জানতে চাইলে তিনি বলেন এবার সুপারি আসে কিন্তু একটু বড় হইলেই সুপারি পইরা যায় কৃষি অফিস থিকা পরামর্শ নিয়া সার দিলাম তাও কাজ হইল না।একই অভিমত ব্যক্ত করেন ওই গ্রামের আরেক কৃষক সামছুল আলম তিনি বলেন আমার বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে ৩০ টি মত গাছ আছে সুপারি আসে কিন্তু পইরা য়ায় আটকে না।শিবেরডাঙ্গী গ্রামের কৃষক কামরুল ইসলাম এর সাথে কথা বললে তিনিও একই অভিমত ব্যাক্ত করেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকা বাগেরহাট,পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, চট্টগ্রাম,কক্সবাজার জেলায় সবচেয়ে বেশি সুপারি চাষ হয়। রংপুর বিভাগের ৮ জেলায়ও সুপারির চাষ হয়। বাগান আকারে, বসতবাড়িতে পুকুর পাড়ে সাধারণত সুপারি গাছ লাগানো হয়।সুপারি গাছের গড় বয়স প্রায় ৪০ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত। সারা বছরই সুপারির ফল হয় তবে পৌষ ও মাঘ মাসে হয় সবচেয়ে বেশি।

এবার পৌষ মাসে প্রচুর পরিমান সুপারির ও নারিকেল গাছে ফুল আসলেও ফল ধারন করার পর ছোট অবস্থাতেই ঝরে পড়ছে।বাগান মালিক ও কৃষকরা বলছে এবছর ফল যে ভাবে ঝরে পড়ছে তা তারা কখনও দেখেনি।রাজীবপুর ও রৌমারী উপজেলা দুটিতে বাগান ও বসতবাড়ি মিলে প্রায় ১ হাজার হেক্টও জমিতে সুপারি ও নারিকেল গাছ রয়েছে। শুধু ফল ঝরে পড়া নয় গাছের পাতাও হলুদ বঙ্গেও হয়ে যাচ্ছে।দুর থেকে দেখলে মানে হয় মৃত গাছ।
এবিষয়ে জানতে চাইলে রাজীবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সামসুজ্জামান বলেন, এবছর তাপমাত্রা বেশি ছিল তাই ফুল আসার পরফ ল হওয়ায় সময় ঝরে পড়ছে। তাছারা তিনি অপরিকল্পিত ভাবে বাগানে গাছ লাগানোকেও কিছুটা দায়ী করেন।প্রায় একই রকম অভিমত ব্যাক্ত করেন রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন।

পিবিএ/আরএস/ইএইচকে

আরও পড়ুন...