উত্তম কুমার হাওলাদার,কলাপাড়া (পটুয়াখালী): তিন নদীর মোহনা, লেম্বুর বন, শুটকি পল্লী, ঝাউ বাগান, চর গঙ্গামতিসহ কুযাকাটার সব পর্যটন স্পটেই এখন পর্যটকদের আনাগোনা। ঈদের ছুটির সাথে এবছর যুক্ত হয়েছে বাংলা নববর্ষ। তাই লম্বা এ ছুটিকে কেন্দ্র করে এসকল পর্যটকের আগমন ঘটে। প্রচন্ড রোদ ও ভ্যাপসা গরমে সমুদ্রের নোনা জলে গা ভাসিয়ে একটু স্বস্থির নিস্বাস নিতে পেরে যেন প্রশান্তির পরশ খুঁজে পেয়েছে আগত পর্যটকরা। অনেকে বিভিন্ন বাহনে ঘুরে দেখছেন দীর্ঘ সৈকতের পর্যটন স্পটগুলো। কেউ আবার সৈকতের বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছেন নৈসর্গিক সৌন্দর্য। আবাসিক হোটেল মোটেল রিসোর্ট গুলোর সবই বুকিং রয়েছে। এমন অবস্থা দুয়েকদিন থাকবে বলে জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে হয়রানী মুক্ত সুন্দর ও সু-শৃঙ্খল পরিবেশে ভ্রমণ করতে পেরে খুশি পর্যটক ও দর্শনার্থীরা।
স্থানীয়রা জানান, দেশি-বিদেশি হাজারো পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে কুয়াকাটার দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত। প্রতিটি পর্যটন স্পটেই এখন সরব উপস্থিতি রয়েছে। জিরো পয়েন্ট-সংলগ্ন পূর্ব-পশ্চিম দিকের অন্তত চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে হাজার হাজার পর্যটক গোসল করছেন।একই সাথে আদিবাসী রাখাইনদের বৌদ্ধ মন্দির,কুয়াকাটার কুয়া,রাখাইন মার্কেট,ফুচকার দোকান,ঝিনুক মার্কেট,পোশাকের দোকান,আবাসিক হোটেল ও খাবার হোটেল সহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভীড় দেখা গেছে লক্ষনীয়।
এদিকে পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর রয়েছে বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি,ট্যুরিষ্ট পুলিশ,নৌ-পুলিশ,থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি স্কাউটের সদস্যরা সেচ্ছা শ্রমে কাজ করছেন।
পর্যটক শাহ আলম বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে বন্ধুরা মিলে কুয়াকাটায় এসেছি। একসঙ্গে এত বেশি পর্যটক দেখে বেশ ভালোই লাগছে। এছাড়া সমুদ্রে ছোট ছোট ঢেউয়ের সঙ্গে সাঁতার কেটেছি। তিন নদীর মোহনা, লেম্বুর বন,ঝাউ বাগান,চর গঙ্গামতি ও লাল কাঁকড়ার চর সহ সকল পর্যটন স্পট ঘোরাঘুরি করেছেন তারা। সব মিলিয়ে সময়টা দারুন কেটেছে।
পর্যটক দম্পতি ইয়ামিন-সায়মা বলেন, বৈশাখ উপলক্ষে এখানে তেমন আয়োজন না থাকলেও কুয়াকাটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দারুন লেগেছে।সবচেয়ে সূর্যোদয় সূর্যাস্তের বিরল দৃশ্য আমাদের মুগ্ধ করেছে।তবে কুয়াকাটার রেস্টুরেন্টগুলোর খাবারের মান আরও ভালো করা দরকার বলে তারা জানান।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কুটুম’র সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন, এবছর বাংলা নববর্ষ ও ঈদের লম্বা ছুটিতে ব্যাপক পর্যটকের চাপ রয়েছে। এছাড়া পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটি ছাড়াও বিশেষ দিনগুলোতে পর্যটকের আগমন বেশি থাকে।
ট্যুরিষ্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের পুলিশ সুপার মো.আনছার উদ্দিন বলেন, ঈদ ও পহেলা বৈশাখ ঘিরে আগত পর্যটকদের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। সিসি ক্যামেরা দ্বারা পর্যটকদের গতিবিধি পর্যবেক্ষনের পাশাপাশি পুরো সৈকত এলাকা নিরাপত্তা বলয় তৈরী করা হয়েছে। পর্যটকদের সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে কাজ করছেন বলে সাংবদিকদের জানিয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।