পিবিএ ডেস্ক: সুলেমান তার শাসনকালে যে বিষয়গুলো নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েন সেটা হল ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য তার কাছের মানুষদের মৃত্যুর আদেশ দেন। এর মধ্যে অনেকের কাছে মর্মান্তিক মনে হয়েছে তার ছেলে মুস্তাফার মৃত্যুর আদেশ। এবং তারপরে তার বাল্যবন্ধু এবং সাম্রাজ্যের উজির ইব্রাহীম পাশার মৃত্যু। এর পর তার ছেলে সেলিম (২য়) কে আদেশ দেন আরেক ছেলে বায়েজিদের মৃত্যু কার্যকর করার জন্য।
যার ফলে বায়েজিদকে মৃত্যুবরণ করতে হয় তার চার সন্তানের সাথে। যেখানে সুলতান সুলেমানকে দেখা যায় সন্তানদের অসম্ভব ভালোবাসতে এবং বিপদে একে অপরের পাশে থাকার উপদেশ দিতে, তিনি কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিলেন সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খায় মানুষের মনে। অনেকেই তাকে “ক্ষমতা লিপ্সু” মনে করেছেন।
তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক সুলতানা সুকন্যা বাশার দুইটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলছিলেন, “আমরা যেকোন সম্রাটের জীবন নিয়ে যখন গবেষণা করি তখন দেখি তারা তাদের জীবনকালে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে চান না। স্বাভাবিকভাবে একজন যখন ক্ষমতা উপভোগ করা শুরু করেন, তখন তিনি চান তার জীবদ্দশায় সেই ক্ষমতা উপভোগ করবেন।”
“একজন সুলতান যখন দেখবেন তার পুত্রের জনপ্রিয়তা তার চেয়ে বেশি এবং তার কানে যদি খবর আসতে থাকে সেই পুত্র বিদ্রোহ করতে পারেন, তাহলে তখন সেই ব্যক্তি কিন্তু বাবা হিসেবে সিদ্ধান্ত নেন না।”
“তিনি সাম্রাজ্যের জন্য তখন একজন সুলতান হিসেবে সিদ্ধান্ত নেন। সেটিকে তিনি দেশদ্রোহীতার শামিল মনে করেছেন। যেটা হয়েছে মুস্তাফার ক্ষেত্রে,” বলছিলেন তিনি।
তবে অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান বলছিলেন, “উত্তরাধিকার নিয়ে যাতে কোন সমস্যা তৈরি না হয় সেজন্য সুলতান সুলেয়মানের আগেই একটি আইন তৈরি করা ছিল।
সাম্রাজ্য যাতে হুমকির মুখে না পড়ে বা স্থায়িত্ব কম না হয় সেকারণে সেই আইনটি করা হয়েছিল। ‘ভ্রাতৃহত্যা আইন’ নামে একটি বিধিবদ্ধ আইন করা হয়েছিল।
এ আইনে শুধু ‘প্রতিদ্বন্দ্বী ভাইদের ও সন্তানদের হত্যা করা যেত’। “এই আইনটি একটি অমানবিক আইন ছিল। যেটার চর্চা সুলতান সুলেয়মান নিজেও করেছেন তার সাম্রাজ্যকে এবং তার ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করার জন্য। যেটা ইতিহাসে আছে এবং তার চরিত্রে এটা একটা অন্ধকার দিক। যেটা তার ব্যক্তিত্বের সাথে সাংঘর্ষিক,” বলছিলেন তিনি। সূত্র: বিবিসি বাংলা
পিবিএ/বাখ