কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ভিন্ন খাতে নিতে বিএনপির নাম জড়ানো সরকারের অপকৌশল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নবগঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে মাজার জিয়ারত করেন মির্জা আব্বাস। এ সময় সমবেত নেতাকর্মীদের নিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকার আন্দোলন সফলে শপথবাক্য পাঠ করান মির্জা আব্বাস।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন পর জিয়াউর রহমানের মাজারে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির বিগত কমিটির নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন থানা এবং ওয়ার্ডের নেতাকর্মী ছাড়াও মহানগর ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী জমায়েত হন। তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে এবং ঢাকা মহানগর বিএনপির নবগঠিত কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিএনপি এই আন্দোলনে ভর করে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে—গণমাধ্যমকর্মীরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এই কোটা সংস্কার আন্দোলন যারা করছে, তাদের দাবি-দাওয়া ন্যায্য। বিএনপি এর সঙ্গে আছে—এই কথা বলে আসল বিষয়টাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করার কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। এটা তাদের একটা অপপ্রয়াস-অপকৌশল এই আন্দোলনকে অন্য দিকে ধাবিত করার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ভয় পাচ্ছি এইটুকুই যে, এই আন্দোলনের ফাঁক দিয়ে আবার অন্য কোনো অপকর্ম তারা (সরকার) করছে কি না, এ দেশের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র করছে কি না, এটা আমরা ভয় পাচ্ছি।’
বিএনপির কোনো আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হয়নি মন্তব্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘(সরকার পতনের একদফা দাবিতে) এই আন্দোলনে আমাদের ছেলেরা, আমাদের কর্মীরা, আমাদের নেতারা দলে দলে জেলে গেছে, এখনো যাচ্ছে। আবার বের হচ্ছে, আবার ঢুকছে। গুলি খেয়েছে, আহত হয়েছে, শাহাদাৎ বরণ করেছে। সুতরাং আন্দোলন ব্যর্থ হয়নি। বরং সরকার আন্দোলনকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে।’
বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের কমিটি গঠনে বাণিজ্য হয় এই অভিযোগ অস্বীকার করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘কমিটিতে বাণিজ্য করা হয় এ কথা ঠিক না। এটা সম্পূর্ণ অলীক কথা-বার্তা। আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে। আহ্বায়ক কমিটি ছাড়া কাউন্সিল হয় না। আহ্বায়ক কমিটি করার পর পরবর্তীতে কাউন্সিল করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়।’
উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো: আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব, সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবীন, যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা মহানগর উত্তর সহ-সভাপতি মো: মোস্তফা কামাল হৃদয় প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত ৭ জুলাই ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, চট্টগ্রাম এবং বরিশাল মহানগরের নতুন আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে বিএনপি।