পিবিএ ডেস্ক: ১৮ বছর বয়সী ব্রিটিশ কিশোরী এবনি স্টিভেনসন। অসুস্থ হয়ে কোমায় চলে যাওয়ার পর যখন জ্ঞান ফিরলো তখন তার পাশে ফুটফুটে এক কন্যা শিশু।
ডাক্তাররা যখন স্টিভেনসনকে জানালো যে, এই শিশু তারই কন্যা তখন সে নিজেই ছিল বিস্ময়াভিভূত।
যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে অবস্থিত ওল্ডহ্যাম শহরে সম্প্রতি এই তাক লাগানো ঘটনটি ঘটেছে।
হঠাৎ করেই প্রচণ্ড ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তাকে জরুরি অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে ডাক্তাররা আবিষ্কার করেন, স্টিভেনসন সন্তান সম্ভবা এবং পেটের শিশুকে বাঁচাতে হলে তাকে তক্ষুনি পেট থেকে বের করতে হবে।
স্টিভেনসনের মা কিছুতেই এই কথা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। কারণ মেয়ের শরীরের গর্ভের কোনো লক্ষণই ছিল না।
কিন্তু ডাক্তাররা তাকে স্বচক্ষে দেখান যে হঠাৎ-হঠাৎ একটুর জন্য কেমন ফুলে উঠে স্টিভেনসনের পেট।
অবশেষে অস্ত্রোপচার হয়। জন্ম নেয় ফুটফুটে কন্যা শিশুর এলোডি।
ডাক্তাররাও খুব অবাক হয়েছিলেন এই জেনে যে, যিনি গর্ভবতী তিনি নিজেই সেই কথা জানতেন না! এমনকি গর্ভবতী নারীদের পেট যেভাবে ফুলে উঠে তেমন কিছু্ও দেখা যায়নি স্টিভেনসনের শরীরে।
স্টিভেনসনের মাসিক-ও হয়েছে প্রতিমাসে, নিয়মিত। তাহলে এই শিশু কিভাবে জন্ম নিলো!
ডাক্তাররা জানাচ্ছেন, এই অবস্থাটিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘ইউটেরাস ডিডালফিস’।
ডাক্তাররা বলেছেন, স্টিভেনসনের ছিল দুটো জরায়ু। সামনের জরায়ুটি থেকে প্রতিমাসে মাসিক হয়েছে। আর সামনের জরায়ুর পেছনে লুকিয়ে থাকা দ্বিতীয় জরায়ুতে বেড়ে উঠেছে এই শিশু।
ফলে, গর্ভাবস্থায় তার পেট-ও বড় হয়নি। শুধু মাঝে মাঝে সকালবেলায় স্টিভেনসনের একটু দুর্বল লাগতো। এছাড়া আর কিছুই টের পাননি তিনি। তাই, সন্তান সম্ভবা হবার পরেও বিষয়টি থেকে গেছে স্বয়ং গর্ভবতীরই জানার বাইরে।
নিজের মেয়েকে এখন সে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশী ভালোবাসে বলে জানিয়েছেন স্টিভেনসন। প্রথমবার কোনো কিছু না জেনে-বুঝেই মা হওয়া এই কিশোরী তার মেয়ের নাম রেখেছেন এলোডি।
সূত্র: বিবিসি বাংলা।