মুহাম্মদ আবুল হুসাইন
সূরা আসরে পরিষ্কার করে বলে দেয়া হয়েছে যে, দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা বা কামিয়াবী নির্ভর করছে চারটি জিনিসের উপর। ১. ঈমান, ২. আল্লাহর হুকুম পালন বা নেক আমল, ৩. হকের দাওয়াত বা ইসলামের প্রচার এবং ৪. সবর বা ধৈর্য ও সহনশীলতার নীতি। বলা হয়েছে সত্যের এ চারটি মূলনীতি থেকে যারা বিচ্যূত হয়েছে তারাই ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত। অতীতে যারা এ পথ থেকে বিচ্যূত হয়েছিল তারা যেমন ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত ছিল; বর্তমানেও যারা ঈমানদারী, আল্লাহ হুকুম পালন এবং সহনশীলতার ও হকের দাওয়াতের পথ থেকে বিচ্যূত হয়েছে তারাও সুস্পষ্ট বিভ্রান্তি ও ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত এবং ভবিষ্যতেও যারা এ পথ থেকে বিচ্যূত হবে ও তারাও ক্ষতির মধ্যেই নিমজ্জিত থাকবে। আর এ ক্ষতি হল দুনিয়া ও আখেরাতেরই চরম ক্ষতি।
বস্তুত, পৃথিবীতে আল্লাহর কালামই হচ্ছে পরম সত্য ও নিরংকুশ জ্ঞানের উৎস। কোন ধরনের বিভ্রান্তি, ভুল চিন্তা, ভুল মত, কোন ধরনের অসম্পূর্ণতা ও অসঙ্গতি এতে নেই। সামান্য সন্দেহ-সংশয় বা অনুমান নির্ভর কোন কথাও এতে বলা হয়নি। মিথ্যা ও বিভ্রান্তি থেকে আল্লাহর কালাম সর্বতো ভাবে মুক্ত ও পবিত্র। এ প্রসঙ্গে আল কোরআনে আল্লাহ চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছেন :
‘যারা জ্ঞানবান মানুষ, তারা তোমার প্রতি তোমার প্রভুর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ এ গ্রন্থ সম্পর্কে মনে করে যে, এ গ্রন্থই হচ্ছে সত্য, এটি মানুষকে পরাক্রান্ত ও প্রশংসিত প্রভুর দিকেই নিয়ে যায়।’ -[সাবা : ৬]
বস্তুত, আল কোরআনের বিপরীতে কোন মানুষের কথা বা বয়ান তুলনীয় হতে পারে না। কারণ আল্লাহ তায়ালাই বলে দিচ্ছেন এভাবে :
‘হে মুহাম্মাদ! বলে দাও, যিনি আসমান ও জমিনের সকল রহস্য জানেন এ কিতাব তিনিই নাযিল করেছেন। তিনি ক্ষমাশীল, মেহেরবান।’ -[ফুরকান : ৬]
‘নিশ্চিতরূপে এ এক সুদৃঢ় ও সুরক্ষিত কিতাব। মিথ্যা না এর সামনে থেকে আসতে পারে আর না পেছন থেকে। এ এক প্রাজ্ঞ ও প্রশংসিত সত্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। -[হা-মীম-আস সিজদাহ : ৪১]
‘এ কিতাবে কোন কথাই সন্দেহের ভিত্তিতে বলা হয়নি।’ -[বাকারা : ২]
বস্তুত, সকল ধরনের পবিত্রতা ও প্রশংসা কেবলমাত্র আল্লাহর জন্যই নির্ধারিত। কারণ কেবলমাত্র তিনিই এর যোগ্য, অন্য কেউ নয়। এটিই আল কোরআনে বর্ণিত তাওহীদ বা একত্ববাদের মূলকথা। ঈমানদারদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা সর্বাবস্থায় ঈমানের এ চেতনাকে লালন করেন এবং এ থেকে তারা কখনো বিচ্যূত হন না।
পিবিএ/এএইচ