কোরআন ও হাদীসের আলোকে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মর্যাদা

হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ জমীর উদ্দিন: মহান আল্লাহ তায়ালার যত সৃষ্টি আছে তার মধ্যে সর্ব শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হচ্ছে হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সাঃ) । তাঁর থেকে শেষ্ঠ কেউ নেই মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে। তাঁর মর্যাদা তিনি হচ্ছেন হাবীবুল্লাহ। স্বয়ং আল্লাহ পাক হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উপর দুরুদ পাঠ করেন, ফেরেস্তারাও দুরুদ পাঠ করেন এবং মুমীনদের কে আল্লাহ তায়ালা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উপর দুরুদ পাঠ করার নির্দেশ দিয়ছেন।

পবিত্র কোরআনুল কারীমে এরশাদ করেন:-

”নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা নিজে এবং তাঁর ফেরেস্তাগন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্র্রতি দুরুদ পাঠ করেন। হে মুমীনগন তোমরা ও হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) প্রতি দুরুদ পাঠ কর এবং যথাযথ ভাবে তাঁকে সম্মান কর।”

(সুরা আহযাব: আয়াত নং–৫৬))

অন্যত্র মহান আল্লাহ তায়ালা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উচ্চ মর্যাদা সম্পর্কে এরশাদ করেন-

আর আমি আপনার মর্যাদা কে অনেক বেশী সম্মানীত করেছি। (সুরা ইনশিরাহ: আয়াত নং-৪)

এই আয়াতদ্বয়সহ আরো অনেক এমন আয়াত রয়েছে, যে গুলোতে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর শেষ্ঠত্বের ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

তাছাড়া অসংখ্য হাদীস শরীফে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মর্যাদার কথা বলা হয়েছে।

হয়রত আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত :

”হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)বলেছেন- আমি আদম সন্তানদের সর্দার।

(সহীই মুসলিম, হাদীস নং-২২৭৮, ইবনেমাজাহ, হাদীসনং – ৪৬৭৩)

অন্য এক হাদীসে হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত :

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন- কিয়ামতের দিন হযরত আদম (আঃ) সহ অন্যান্য নবী রাসুলগণ আমার কাতারের নীচে থাকবে।

(মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং ৬৪১৩)

অন্য স্থানে হযরত উবাইদা ইবনে কাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত:

“রাসুল (সাঃ) বর্ণনা করেছেন কিয়ামতের দিন আমি সমস্ত নবীদের সর্দার হব।”

( তিরমিজী, হাদীস নং- ৩৬২৩, ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪৩১৪)

এছাড়া ও আরো অসংখ্যা আয়াত ও হাদীসে রাসুল (সাঃ) এর মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। রাসুল (সাঃ) এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব বর্ণনা করে শেষ করা যাবেনা।

রাসুল (সাঃ) এর কিছু অনন্য বৈশিষ্টাবলীঃ

রাসুল (সাঃ) এমন অনেক বৈশিষ্ট রয়েছে যে গুলো পূর্বের কোন নবী রাসুলগণের মাঝে ছিল না।

কিছু বৈশিষ্ট তুলে ধরা হল:

১। পূর্বের সমস্ত নবীরাসুলগণ কোন জনপদ বা গোত্রের জন্য প্রেরিত হয়েছেন কিন্তু রাসুল (সাঃ) সমস্ত জগতের জন্যে প্রেরিত

পবিত্র কোরআনুল কারীমে এরশাদ করেন:-

আমি আপনাকে সমগ্র মানব জাতীর জন্যে সুসংবাদ দানকারী ও ভীতি প্রদর্শন কারী হিসেবে প্রেরন করেছি।

(সুরা: সাবা, আয়াত নং- ২৮)

অন্যত্র এরশাদ হয়েছে- হে নবী বলুন, হে মানব সকল আমি তোমাদের সকলের জন্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত রাসুল।

(সুরা: আরফ, আয়াত নং-১৫৮)

২। আল্লাহ তায়ালা কোনআনুল কারীমে পূর্বের সকল নবী রাসুলগণকে তাদের স্ব স্ব নাম ধরে ডেকেছেন , হে মুসা, হে আদম, হে ইব্রাহীম বলেছেন। কিন্তু কোথাও হে মুহাম্মদ বলে ডাকেন নি বরং তাঁর সম্মানে ও রাসুল, হে নবী বলে ডেকেছেন।

৩। পূর্বের সকল নবী রাসুলের জন্যে ইবাদতের নির্দিষ্ট স্থান ছিল এবং নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে ইবাদত করা আবশ্যক ছিল কিন্তু রাসুল (সাঃ) এর জন্য সমস্ত যমীনকে ইবাদাতের উপযুক্ত স্থান করে দেন।

৪। পূর্বের সকলের নবুয়াত তাদের মুত্যুর সাথে সাথেই শেষ হয়ে যেত কিন্তু রাসুল (সাঃ) এর নবুয়াত কিয়ামত পর্যন্ত বাকী থাকবে।

৫। পূর্বের কারো জন্যে মালে গনীমত বৈধ ছিলনা কিন্তু রাসুল (সাঃ) এর জন্য তা বৈধ।

এছাড়াও আরো অনেক বৈশিষ্ট আছে যা দ্বারা বোঝা যায় যে আমাদের নবী রাসুল (সাঃ) এর মর্যাদা অন্য সকল নবী রাসুলগণের তুলনায় অনেক বেশী। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে রাসুল (সাঃ) এর মর্যাদা বুঝে তাঁর কথামত জীবন যাপন করে উভয় জগতে সফলতা লাভ করার তৌফিক দান করুন। আমীন

পিবিএ/এমএসএম

আরও পড়ুন...