বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. জিয়াউল হক। বৃহস্পতিবার তিনি বাহিনীটির ১৫তম মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষণ-১ অধিশাখার প্রজ্ঞাপনে উক্ত কর্মকর্তাকে কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
জিয়াউল হক ১ জানুয়ারি ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি জার্মানিতে নেভাল অফিসার্স ট্রেনিং কোর্স সম্পন্ন করেন এবং ১ জুলাই ১৯৯১ সালে এক্সিকিউটিভ শাখায় কমিশন লাভ করেন। পরবর্তী সময় তার চাকুরি জীবন সামুদ্রিক অভিজ্ঞতা, দেশে বিদেশে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এবং গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিযুক্তির মধ্য দিয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে।
তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্যাট্রোল ক্রাফট থেকে শুরু করে ফ্রিগেট পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের পাঁচটি যুদ্ধজাহাজের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অতিগুরুত্বপূর্ণ দুইটি ঘাঁটি বিএনএস উল্কা এবং বিএনএস শহীদ মোয়াজ্জম এর অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বানৌজা ঈসাখান এ টর্পেডো এন্ড সাবমেরিন স্কুলের প্রশিক্ষক, বাংলাদেশ নেভাল একাডেমির প্রশিক্ষণ সমন্বয়কারী কর্মকর্তা, প্রশিক্ষণ জাহাজ বিএনএস উমর ফারুক-এর ট্রেনিং কমান্ডার এবং ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ, মিরপুর এর সিনিয়র ইন্সট্রাক্টর (নৌবাহিনী) হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি তিনি কমান্ডার অপারেশনাল সি ট্রেনিং গাইড (ওএসটিজি), স্টাফ অফিসার (অপ্স অ্যান্ড প্ল্যানস) এবং নৌসদর দপ্তরে পরিচালক অপারেশনস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি কমডোর নেভাল এভিয়েশন (COMNAV) এবং নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত ছিলেন।
রিয়ার অ্যাডমিরাল এম জিয়াউল হক তার সুদীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য চাকুরি জীবনে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিভিন্ন জাহাজ ও নৌ সদর দপ্তরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ, মিরপুর, আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স, মিরপুর, আর্মড ফোর্স কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ, সৌদি আরব, বাংলাদেশ পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং সেন্টার, সাভার, এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ, ভারত এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এছাড়াও তিনি ভারত হতে এন্টি সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার কোর্স ও তুরস্ক থেকে সাবমেরিন ফায়ার কন্ট্রোল কোওর্ডিনেশন কোর্স সম্পন্ন করেন। উল্লেখ্য, তিনি আইভরি কোস্টে শান্তিরক্ষা মিশনে সামরিক পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
রিয়ার অ্যাডমিরাল জিয়াউল হক নৌবাহিনীতে তার বিশিষ্ট সেবার কারণে অসামান্য সেবা পদক (ওএসপি) এবং ২০২৩ সালে জাতীয় শুদ্ধাচার পদক প্রাপ্ত হন।
রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. জিয়াউল হক দীর্ঘ ৩৫ বছরের কর্মজীবনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে অসাধারণ পেশাদারিত্ব ও সামরিক সক্ষমতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এর উন্নয়ন এবং অগ্রগতিতে বদ্ধপরিকর।