পবিত্রতার জন্য অজুর বিকল্প কিছুই নেই। অজু হল ইসলামের বিধান অনুসারে দেহের অঙ্গ-প্রতঙ্গ ধৌত করার মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জনের একটি পন্থা। মুসলমানদের নামাজের পূর্বে অজু করে নেয়া বাধ্যতামূলক। কুরআনে আছে, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন।” (সূরা বাকারা,আয়াত:২২২)।
কোরআন পড়তে ও স্পর্শ করতেও অজু করতে হয়। কোরআনে বর্ণিত আছে, “যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না।” (সূরা ওয়াক্কিয়াহ্, আয়াত:৭৯)। এখানে পাক পবিত্র বলতে দৈহিক পবিত্রতা নয় বরং আত্মিক পবিত্রতার কথা বলা হয়েছে। নামাজ বেহেস্তের চাবি আর নামাজের চাবি অজু। অজু না হলে নামাজ হয় না। তাই অজু নামাজের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। অজু নামাজ পালনের জন্য ফরজ ইবাদত।
আল্লাহ তাআলা বান্দার নামাজ আদায়ের জন্য অজুকে করেছেন ফরজ। বিনা অজুতে ফরজ ইবাদত করা গুনাহের কাজ। নিজেকে পবিত্র করতে অনেক সময় খালি গায়ে অজু করে থাকেন। এতে একটি প্রশ্ন এসে যায় যে, খালি গায়ে অজু করলে অজু হবে কিনা।
ইসলামবিষয়ক এক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠানে এমন এক প্রশ্নের জবাবে বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ বলেন, কেউ যদি খালি গায়ে অজু করে তাহলে তার অজু হয়ে যাবে কোনো সন্দেহ নেই। এতে অজু বিনষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নেই। অজু ভঙ্গকারী বা অজুর জন্য ক্ষতিকর বা মাকরু বা অপছন্দনীয় কাজ এটি নয়।
অজুর যে আরকান রয়েছে, সেগুলো যদি ঠিকমতো আদায় করে থাকেন তাহলে তার অজু হয়ে যাবে।
অজু ভঙ্গের মৌলিক কিছু কারণ রয়েছে। সেগুলো হলো-
পেশাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। দেহের কোনো অংশ থেকে রক্ত, পুঁজ বের হয়ে যদি পবিত্র হওয়ার বিধান প্রযোজ্য হয়। অর্থাৎ গড়িয়ে পড়ে।
মুখ ভর্তি বমি অর্থাৎ বেশি পরিমাণে বমি হলে। নাক দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হলে।
চিৎ হয়ে, কাত হয়ে, হেলান দিয়ে কিংবা কোনো কিছুর সঙ্গে ঠেস দিয়ে ঘুমালে। যা সরিয়ে ফেললে ঘুমন্ত ব্যক্তি পড়ে যাবে। অজ্ঞান হওয়ার পর; এমন অজ্ঞান যাতে বোধ শক্তি লোপ পায়। অপ্রকৃতিস্থতা। যা ঘুম বা নিদ্রার চেয়েও প্রবল।
রুকু-সাজদা বিশিষ্ট নামাজে অট্ট হাসি; তবে জানাজা নামাজে, তিলাওয়াতে সিজদায় এবং নামাজের বাইরে হাসলে অজু নষ্ট হবে না। পেছনের রাস্তা দিয়ে অর্থাৎ পায়খানার রাস্তা দিয়ে কীট বের হলে পবিত্রতা অর্জন তথা অজু করতে হবে।
ফোঁড়া বা ফোস্কার চামড়া তুলে ফেলার কারণে যদি পানি বা পুঁজ বের হয়ে ফোঁড়া বা ফোস্কার মুখ অতিক্রম করে তাহলে পবিত্রতা নষ্ট হবে।
পুরুষ ও নারীর গুপ্তাঙ্গ কোনো অন্তরায় ব্যতিত একত্রিত হলে; বীর্যপাত হোক আর না হোক অজু নষ্ট হবে।