পিবিএ,ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার যে ব্যবস্থাপনা দরকার তা বাংলাদেশে নেই বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেছেন, তিনি (খালেদা জিয়া) এখন তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে যাচ্ছেন। ডাক্তার বলেছেন, গত কয়েকদিন ধরে খুবই কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সোনার বাংলা পার্টির ১২তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মান্না বলেন, ডাক্তাররা একটা অপারেশন করেছিল। সেইসময় তার যে নার্ভটা চিড়ে গেছে তার চিকিৎসার ফলে সেটা দুইদিন ঠিকমতো চলেছে কিন্তু এটা সাময়িক। এটা ভালোভাবে চিকিৎসার জন্য যে যন্ত্রপাতি বা চিকিৎসা ব্যবস্থা দরকার তা বাংলাদেশে নেই। এর জন্য বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়া দরকার যা এই সরকার দিচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী কত নিষ্ঠুর রসিকতা করে বলেছেন, তার জন্য যতটুকু করার করেছি। কিন্তু এই দেশে কে জানে না যে বাংলাদেশে এখন একটা গাছের পাতা নড়তে পারে না শেখ হাসিনার কথা ছাড়া।
মান্না বলেন, এরশাদ পতন আন্দোলনের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগের সাথে থেকে শেখ হাসিনাসহ আমরাই বলেছিলাম, আইন মানুষের জন্যই মানুষ আইনের জন্য নয়। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার করার কোনো আইন সেসময় ছিল না। পরবর্তীতে সেটা আইনে অন্তর্ভুক্ত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেওয়া হয়েছিল। তখন এতবড় পরিবর্তন যদি করা যায় এখন একটা মানুষকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো যাবে না এমন কোনো কথা হতে পারে?
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এখন বিবর্ণ। কারও কোনো কথা বলার সাহস নেই। যদি বলেনও আর তা যদি সরকারের পছন্দ না হয় উঠিয়ে নিয়ে যাবে তাকে। এরপর হয়তো কোথাও লাশ পাওয়া যাবে আর আপনি তার বিচার ও চাইতে পারবেন না।
‘আমি কতগুলো প্রোগ্রামে বক্তৃতা দিলাম মায়ের ডাক অনুষ্ঠানে। ওই মায়েরা সন্তান হারিয়েছে কারও দুই বছর, কারও পাঁচ বছর, কারও ১০ বছর। তাদের কোনো খবর-ই নেই। তারা যায় কোর্টে, ডিবি অফিসে, পুলিশের কাছে। তারা মামলা পর্যন্ত নেয় না এবং পরিবার জানতে চায় আমার সন্তান কই, আমার বাবা কই আর তারা বলে আমাদের কাছে কোনো খবর নেই।’
মান্না বলেন, এদেশে গত দেড় বছরে করোনার সময়ে প্রায় তিন কোটি ৪০ লাখ লোক দারিদ্রসীমার নিছে নেমেছে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমরা এত উন্নতি করি সেটা চোখে পড়ে না আপনাদের কাছে। আবার তিনিই বলেন, এই উন্নতির ফলাফল ১০ শতাংশ লোকই ভোগ করেছে, বাকি ৯০ শতাংশ মানুষের কাছে যায়নি। কোনো কোনো মন্ত্রী বলেন, আমরা উন্নয়নের রোল মডেল আর বিমান দিয়ে যাওয়ার সময় দেশকে সিঙ্গাপুর, লস অ্যাঞ্জেলস দেখেন আর সাধারণ মানুষ বলে এটা লস বাংলাদেশ।
সিটি করপোরেশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন একটা মানুষকে ময়লার গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলেছে। আর উত্তর সিটি করপোরেশন বলে আমরা বাকি থাকবো কেন, তারাও একজনকে চাপা দিয়ে মেরে ফেলেছে। দুইটা ট্রাক দুইজন মানুষকে মেরেছে পরপর দুইদিনে। দিনের বেলায় ময়লার গাড়ি কী করতে বের হয়? এগুলো তো রাতে কাজ করার কথা। কিন্তু কোনো রকম জবাবদিহিতা নেই তাদের। তারা তো বলেন, মানুষ আন্দোলনে নামে না। তাহলে গত দুই-তিনদিনে এত আন্দোলন হয়েছে সেগুলো কী। হাফ পাস, ভাড়া কমানো, নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানুষ রাস্তায় নেমেছে।
মাহমুদুর রহমান মান্না আরও বলেন, দেশে যে বিক্ষিপ্ত আন্দোলন হচ্ছে তা স্ফুলিঙ্গ। আর এই স্ফুলিঙ্গ অচিরেই আগ্নেয়গিরি হয়ে উঠবে। সেজন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, সোনার বাংলা পার্টির উপদেষ্টা আবুল কাশেম ফজলুল হক ও সোনার বাংলা পার্টির সভাপতি শাহ আব্দুর নুর।
পিবিএ/জেডএইচ