খালেদা জিয়া রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার : ফখরুল

পিবিএ,ঢাকা: খালেদা জিয়া রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে গেছেন অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, প্রতিহিংসাটা অত্যন্ত গভীরে। আজকের শাসকগোষ্ঠী পুরোপুরি অবৈধভাবে জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসে আছে। তাদের পক্ষে এই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা, সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করা, মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া সম্ভব হবে না, যদি খালেদা জিয়া বাইরে থাকেন। সে কারণে তাকে কারাগারে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, একই ধরনের মামলায় অন্য যারা সাজা পেয়েছেন তারা জামিনে আছেন। সেক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার বিষয়ে এটাকে পুরোপুরি দলীয়করণের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আগেও বলেছি পৃথিবীর ইতিহাসে বোধ হয় খুব কম গণতান্ত্রিক দল আছে যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য এতো বেশি সাফার করেছে। দুই মাসে আগের হিসাবে ২৬ লাখ আসামি করা হয়েছে; এক লাখের ওপরে মামলা, ৫০০-এর ওপরে নেতাকর্মী গুম ও কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।

‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) গতকাল সংসদে বলেছেন, আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। করলে বিরোধীদের অস্তিত্ব থাকতো না। একথাটা বলে উনি কি এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে অস্তিত্ব রক্ষা না করার জন্যই তারা কাজ করে যাচ্ছেন?’ মহিলাদল নেত্রী রাজিয়া আলিমকে গ্রেফতার করার বিষয়টি উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, গ্রেফতার এখনো চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, যুবদল সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাব, তাঁতী দলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা শাহ মো. নেসারুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দেশ সমৃদ্ধির দিকে যাচ্ছে বলে সরকার যে দাবি করছে সেটিকে রূপকথার গল্প বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সরকার উন্নয়ন উন্নয়ন বলে যে চিৎকার করছে, জিগির তুলছে সেটি রূপকথার গল্প। বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। একই ধরণের মামলায় অন্যরা জামিন পেলেও অসুস্থ হয়েও তিনি পাচ্ছেন না। তাকে ষড়যন্ত্র করে আটকে রাখা হয়েছে।

সরকার বিরোধী মত দমনে ব্যস্ত এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, শুধু বিএনপির নেতাকর্মীরাই নিপীড়নের শিকার নন। অন্যান্য বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা হয়েছে। ওইসব মামলায় লাখ লাখ আসামি। মূলত বিরোধী মত দমনে সরকার ব্যস্ত। এর আগে বিএনপি মহাসচিব বেলা ১১টায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে এক যৌথসভা করেন।

সভায় বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে সর্বসম্মতিক্রমে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-

১৫ সেপ্টেম্বর রোববার জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে মানববন্ধন। ১৬ সেপ্টেম্বর সোমবার জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে মানববন্ধন। ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের উদ্যোগে মানববন্ধন।
১৮ সেপ্টেম্বর এ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ (এইবি) এর উদ্যোগে মানববন্ধন। ১৯ সেপ্টেম্বর ডক্টর এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর উদ্যোগে মানববন্ধন। ২০ সেপ্টেম্বর জাতীয়তাবাদী যুবদলের উদ্যোগে দেশব্যাপী মানববন্ধন। ২১ সেপ্টেম্বর জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের উদ্যোগে মানববন্ধন।

২২ সেপ্টেম্বর জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে দেশব্যাপী মানববন্ধন। ২৪ সেপ্টেম্বর জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগ মানববন্ধন। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বুধবার জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে মানববন্ধন। ২৭ সেপ্টেম্বর এগ্রিকালচারিষ্ট এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এ্যাব) উদ্যোগে মানববন্ধন। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ শনিবার জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে মানববন্ধন।

যৌথ সভা শে‌ষে সংবাদ স‌ম্মেল‌নে কর্মসূ‌চি ঘোষণা ক‌রেন বিএনপি মহাসচিব। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলনসহ বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

পিবিএ/বাখ

আরও পড়ুন...