খুলনা রেলস্টেশনে টিকিট কাউন্টার বন্ধ,যাত্রী দুর্ভোগ চরমে

পিবিএ,খুলনা: শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় খুলনা রেলস্টেশনে অগ্রীম টিকিট নিতে এসেছেন ডুমুরিয়া উপজেলার আব্দুস সালাম। কিন্তু স্টেশনের ৬টি কাউন্টারের সবগুলোই বন্ধ দেখেন তিনি। একটি কাউন্টার খোলা থাকলেও সেখানে টিকিট দেওয়ার লোক নেই। অগত্যা স্টেশনের সামনে ঘুরাঘুরি করে সময় কাটাচ্ছেন তিনি।

খুলনা রেলস্টেশনে

আব্দুস সালামের মত অনেকেই টিকিট নিতে এসে স্টেশন ও এর আশপাশে ঘোরাফেরা করে সময় কাটাতে দেখা গেছে। আবার অনেকেই বিরক্ত হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
খুলনা নগরীর টুটপাড়া থেকে মেহেদী হাসান নামে এক ব্যাক্তি টিকিট নিতে এসে অনেকক্ষন অপেক্ষার পর বাসায় ফিরে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘খুলনাবাসির দাবীর মুখে রেল স্টেশনটি আধুনিকায়ন করা হলেও এর সেবার মান বাড়ানো হয়নি। ফলে যাত্রীদের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আগের মতই।’

স্টেশনের সামনে অপেক্ষারত টিকিট প্রত্যাসিদের অভিযোগ, ইচ্ছামত কাউন্টার খোলা হয়। আবার খোলা কাউন্টারের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কখনো কখনো দু’টো কাউন্টার এক সাথে খোলা থাকলেও সেখানে দীর্ঘ লাইন পড়ে। অনেক সময় লাইনের শেষের লোকজনকে টিকিট না নিয়েই ফিরে যেতে হয়। তবে জনবল সংকটের কারণে চারটি কাউন্টার বন্ধ বলে জানান রেলের কর্মচারীরা। তাদের ভাষ্য, যাত্রীরা চাইলে কাউন্টারে অপেক্ষা না করে অনলাইনের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করতে পারেন।

খুলনা রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, যাত্রী সুবিধা বাড়াতে ৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনায় আধুনিক রেলস্টেশন ও প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ করা হয়েছে। গত ২৫ নভেম্বর নতুন এ রেলস্টেশন চালু করা হয়। এ স্টেশন থেকে প্রতিদিন ঢাকা, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন রুটে মোট ১১টি ট্রেন ছেড়ে যায়। এসব ট্রেনে যাত্রী হয় সাড়ে ৩ হাজারের বেশি। এ অবস্থায় টিকিট কাউন্টারে কর্তব্যরতদের খামখেয়ালিপনায় টিকিট নিতে আসা যাত্রীদের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যাত্রীদের অভিযোগ, মাঝেমধ্যে সন্ধ্যা না পেরোতেই টিকিট কাউন্টার বন্ধ হয়ে যায়। তখন কেউ অগ্রিম টিকিট কিনতে পারেন না। এ নিয়ে ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।

লুৎফুন্নাহার নামে এক টিকিট প্রত্যাসিপিবিএ’কে বলেন, নতুন স্টেশনের ৩ নম্বর কাউন্টারটি নারীদের জন্য। কিন্তু ওই কাউন্টারটি সব সময় বন্ধ থাকে। যে কারণে ঘন্টার পর ঘণ্টা ধরে পুরুষের সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট কাটতে হয়।

যাত্রীরা জানান, ঈদ উপলক্ষে আগামী ২২ মে থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। তখনও যদি এভাবে কাউন্টার বন্ধ রাখা হয়, তাহলে যাত্রীদের দুর্ভোগের সীমা থাকবে না।
খুলনা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার পিবিএ’কে বলেন, টিকিট কাউন্টার বন্ধ থাকে এটা ঠিক নয়। আধুনিক স্টেশন ভবনে কাউন্টারের সংখ্যা বাড়লেও জনবল বাড়েনি। ফলে দুটি কাউন্টার সবসময় চালু থাকে। জনবলের অভাবে অন্য কাউন্টার একেবারেই চালু করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, সব টিকিট কাউন্টার চালু করতে গেলে আরও চারজন কর্মচারী প্রয়োজন।

পবিএ/ এইচআর/হক

আরও পড়ুন...