গণপ্রতিবাদ সমাবেশে পরিবহন ধর্মঘট প্রতিরোধের ডাক

পিবিএ,সিলেট: সিলেট-সুনামগঞ্জ নিরাপদ সড়ক স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির উদ্যোগে এক গণ প্রতিবাদ সমাবেশে পরিবহন মালিকদের ডাকা ৭২ ঘন্টার ধর্মঘট প্রতিরোধের ডাক দেয়া হয়েছে।

সমাবেশ আয়োজকদের দাবি সুনামগঞ্জ সিলেট আঞ্চলিক সড়কে বিআরটিসির বাস চলাচল বন্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ বিশেষ সাধারণ যাত্রীদের জিম্মি করে পরিবহন মালিকরা প্রথমে ২৩ জুন পরবর্তীতে গণচাঁপে তারিখ পরিবর্তন করে ২৪ জুন থেকে ৭২ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ব্রাম্মণবাড়িয়া সিলেট ও সুনামগঞ্জ সড়কে।

সুনামগঞ্জের ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্টে শনিবার বিকেলে গণপ্রতিবাদ সমাবেশে সংগঠনের উদ্যোক্তা আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল তার বক্তব্যে বলেন, অনেক পরিবহন শ্রমিক নিজেরাই ওই ষড়যন্ত্রের ধর্মঘটের পক্ষে নয়।

তিনি আরো বলেন, জনগণের টাকায় সড়ক সেতু নির্মাণ হয়, সেই সড়কে জনগণের গাড়ি সরকারের গাড়ি বিআরটিসির বাস চলাচলে বাধা কেন? পরিবহন মালিকরা বিআরটিসির বাস চলাচল বন্ধে যে ষড়যন্ত্রের জাল পেতেছেন তা আম জনতা বুঝে গেছেন, মানুষ পরিবহন মালিকদের ডাকা নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ধর্মঘট যথাসময়েই প্রতিরোধ গড়ে তোলবে, বিআরটিসির বাস চলাচলে জনতা সার্বিক সহযোগীতা করবে।

ছাতক উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক আহবায়ক শামীম তালুকদারের সভাপতিত্বে ও শিক্ষক নেতা পংকজ দত্তের পরিচালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযোদ্ধা কবির উদ্দিন লালা, সাংবাদিক বদর উদ্দিন আহমদ, রেজাউল করিম রেজা, যুবলীগ নেতা ফয়জুল ইসলাম ফজল, কাউসার আহমদ, আলোর রক্তদান সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি মুহিবুর রহমান, শ্রমিকলীগ নেতা বিরহাম আলী, শিক্ষক আব্দুল বাছিত, হাওর বাচাঁও-সুনামগঞ্জ বাঁচাও কমিটির ওবায়দুল হক মিলন, ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান বাবলু প্রমুখ।
সুনামগঞ্জ বাস-মিনিবাস মালিক গ্রুপের সাধারন সম্পাদক জুয়েল মিয়ার দাবি, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে বিআরটিসি বাস চলাচলের ক্ষেত্রে পরিবহন মালিকরা কিছুই জানেন না এজন্য ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।’


এদিকে পরিবহন সেক্টরে অহেতুক ধর্মঘটের নামে নৈরাজ্য র্সষ্টির প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে সকল শ্রেণিপেশার লোকজনকে নিয়ে আজ রোববার সন্ধায় শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগত জ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরিতে এক সভা আহবান করা হয়েছে। ওই সভা থেকে পরিবহন মালিকদের ডাকা ধর্মঘটের নামে নৈরাজ্য প্রতিরোধ সুচিন্তিত মতামত প্রদানের আহ্বান জানানো হবে বলে জানান সাংবাদিক শামস শামীম।
অপরদিকে সুনামগঞ্জ যাত্রী কল্যাণ পরিষদ শনিবার রাতে শহরের হাসননগরস্থ সদর হাসপাতাল এলাকায় ধর্মঘটের নামে নৈরাজ্য প্রতিরোধ এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ধর্মঘট প্রতিরোধে পাল্টা কর্মসুচী হিসাবে সভা থেকে সোমবার বেলা ১১টায় সিলেট-সুনামগঞ্জে সড়কে উন্নত বাস সার্ভিস চালু, ফিটনেসবিহিন গাড়ী সড়ক থেকে সড়িয়ে দেয়া, পরিবহন ধর্মঘটের নামে সাধারণ মানুষকে হয়রানি বন্ধ করা, বিআরটিসি বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করার দাবিতে শহরের নানা শ্রেণি পেশার মানুষের অংশগ্রহনে শহরের আলফাত উদ্দিন স্কায়ারে মানববন্ধন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। এছাড়া অযৌক্তিক পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা না হলে সমাবেশ থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণাও দেয়া হবে বলে জানান সংগঠনের নেতৃবৃন্ধ।

রোববার সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খান বলেন ‘সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলনই সফল হয় না। সুনামগঞ্জে বিআরটিসির বাস চলছে মাত্র ৬টি। জনগণের সড়কে জনগণের গাড়ি চলতে পারবে না, এটা অনৈতিক দাবি। পরিবহন মালিকদের কেউ কেউ ৩০ বছরের পুরাতন বাস রং করে সড়কে চালাচ্ছেন। পরিবহন মালিকরা ভালো মানের আরো বেশি বাস সড়কে নামাতে পারেন কিন্তু এভাবে অনৈতিক ধর্মঘটের নামে কোন ধরণের নৈরাজ্য গণপ্রতিবন্ধকতা কে মানবে?।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, বিআরটিসি বলে কোন কথা নয়, যারা ভালো গাড়ি সড়কে নামাবেন এবং দক্ষ চালক দ্বারা চালাবেন, যাত্রী সেবা ভালো দেবেন, মানুষ সেই গাড়িতে যাতায়াত করবেন । ফিটনেস বিহীন গাড়ি সড়ক থেকে সড়ানোর লক্ষে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে আলোচনা করে শীঘ্রই সুনামগঞ্জ সিলেট সড়কে বিরামহীন অভিযান চলবে বলেও জানান তিনি।

পিবিএ/এইচএস/হক

আরও পড়ুন...