গত তিন মাসে ধর্ষণের শিকার ১৬৪ শিশু

প্রতীকি ছবি

পিবিএ,ঢাকা: চলতি বছরের তিন মাসে ১৬৪ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। শুধু এপ্রিল মাসে শিশু ধর্ষণের সংখ্যা ৩৯ জন। ২০১৮ সালে ৮ হাজার ৫৮৮ জন শিশু সহিংসতার শিকার হয়। উক্ত সময়ে ২৫৪ জনকে হত্যা করা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কার্যালয়ে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ ও ওল্ড বেইলি চেম্বার কর্তৃক ‘শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে আইনি কাঠামো’শীর্ষক বিশ্লেষণ প্রতিবেদন উপস্থাপন ও মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ ও মানবাধিকার কমিশন এই সভার আয়োজন করে।

বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের জরিপেও ধর্ষণের একই চিত্র পাওয়া যায়। তারা বলছে, চলতি বছরের তিন মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৬৪ জন শিশু। এ সংখ্যা জানুয়ারিতে ছিল ৫২, ফেব্রুয়ারিতে বেড়ে হয় ৬০ এবং মার্চে ফের ৫২ জনে দাঁড়ায়। গত তিন মাসে গণ-ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৯ জন। এর মধ্যে ৭ জন প্রতিবন্ধী শিশুও ধর্ষণের শিকার হয়। ধর্ষণ-চেষ্টা হয়েছে ৮ জনের ওপর। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১২ জনকে। এ ছাড়া অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে ১১ জনকে। শারীরিক নির্যাতনের শিকার ১৬ জন। ২০১৮ সালে প্রতিদিন গড়ে ১৩ শিশু নির্যাতন, দুই শিশু ধর্ষণ এবং এক শিশু হত্যার শিকার হতো। ২০১৭ সালের চেয়ে ২০১৮ সালে শিশু ধর্ষণ বেড়েছে অন্তত ৩৪ শতাংশ।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সভায় কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধ করা না গেলে শিশুবান্ধব সরকার বলে আমরা যে গর্ব করি তা থাকবে না । তিনি বলেন, দেশে শিশু নির্যাতন বন্ধে অনেক আইন আছে কিন্তু আইনের বাস্তবায়ন নেই। কেন আইনের বাস্তবায়ন নেই তা আমাদের পর্যবেক্ষণ করে দেখতে হবে। কেন প্রতিবাদ করতে গিয়ে নুসরাতের মৃত্যু হয়।তাহলে কি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা যাবে না। আমাদের অনেক অর্জন আছে, শিশুকে নিরাপত্তা দিতে না পারলে তা ম্লান হয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত শিশুবান্ধব ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার কন্যা শেখ হাসিনাও ভীষণভাবে শিশুবান্ধব, তাই আমরা আশা করি শিশুর প্রতি সকল প্রকার নির্যাতন বন্ধে আমরা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলবো।

অনুষ্ঠানে শিশুর নিরাপত্তার জন্য বিদ্যমান আইনের যথার্থতা, বাস্তবায়নযোগ্যতা বিশ্লেষণসহ শিশু নির্যাতন রোধে সংশ্লিষ্ট মহল কিভাবে কাজ করে তা অনুধাবন করার জন্য ১৩ টি আইন, ৪টি নীতি, ৮টি প্রবন্ধ পর্যালোচনা এবং বেশ কয়েকজনকে ইন্টারভিউ করে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। এতে বলা হয় ১৯৭৪ সালে শিশু অধিকার আইন করা হয়, ২০১৩ সালে শিশুআইন আবার নতুন করা হয় কিন্তু এখনও বিধি হয়নি। ২০১১ সালে জাতীয় শিশুনীতি করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০১০ও বিদ্যমান কিন্তু তারপরও শিশু নির্যাতন চলছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুকে শাস্তিও দেওয়া হচ্ছে। তাই মায়েরা যদি শিশুর সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে আসে তবে শিশু নির্যাতন কমবে বলে মত প্রকাশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ-এর এডভোকেসি পরিচালক সাবিরা সুলতানা নুপুর, পরিচালক চন্দন গোমেজ, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব এ জে এম এরশাদ আহসান হাবিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব আনোয়ারুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...