গাইবান্ধায় করোনায় দুধের বাজার মন্দা

পিবিএ,গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় দুগ্ধ খামারিরা করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বিপাকে পড়েছেন। হোটেল ও চায়ের দোকান বন্ধ। সাধারণ মানুষও দুধ কিনছেন না। ফলে পানির দামেও দুধ বিক্রি করতে পারছেন না খামারিরা। এদিকে গো-খাদ্যের দামও বেড়েছে। ভাবনায় এখন খামারিরা।

গাইবান্ধার সাতটি উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে দুধের দাম কমে গেছে। প্রতি কেজি দুধ এখন ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছে। তারপরও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। করোনা ভাইরাসের কারণে চায়ের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ রয়েছে। তাই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে লোকসান দিয়ে চলছে জেলার গরুর খামারগুলো।

গাইবান্ধার কয়েকটি গরুর খামার ঘুরে দেখা গেছে, খামারিদের দুর্দশার চিত্র। দুধের দাম কমে গেছে। পক্ষান্তরে গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে। ফলে খামারিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের খামারমালিক তপন কুমার সরকার (৪৫) বলেন, আমার খামারে ২০টি গাভি রয়েছে। এরমধ্যে বর্তমানে পাঁচটি গাভি দুধ দিচ্ছে। দৈনিক দুই মণ দুধ উৎপাদন হচ্ছে।

তিনি বলেন, খামারে প্রতিদিন ৬ হাজার টাকার গো-খাদ্য লাগছে। এ ছাড়া দৈনিক তিনজন শ্রমিকের মজুরি দিতে হয় ১ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতিদিন খামারের পিছনে মোট খরচ হচ্ছে ৭ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু প্রতি কেজি ৪০ টাকা হিসেবে দুই মণ দুধ বিক্রি করছি ৩ হাজার ২০০ টাকায়। দৈনিক লোকসান হচ্ছে ৪ হাজার ৩০০ টাকা।

তিনি আরো বলেন, চায়ের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় দুধের দাম কমে গেছে। কিন্তু গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে। ফলে লোকসান দিয়ে খামার চালাতে হচ্ছে।

পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ি গ্রামের খামারমালিক আবদুল গফুর (৫৫) ও সাদুল্লাপুর উপজেলার উত্তর হাটবামুনি গ্রামের খামারমালিক গোলাম রব্বানী তাদের লোকসানের কথা জানান।

এসব বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আবদুস ছামাদ বলেন, লকডাউনের কারণে যানবাহন বন্ধ। বাইরের পাইকাররা আসতে পারছেন না। এ ছাড়া জেলা ও উপজেলা শহরের দোকানপাট, চায়ের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ রয়েছে। ফলে দুধের চাহিদা কমে গেছে। এ কারণে দুধের দামও কমে গেছে। ফলে খামারিদের ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে। তিনি বলেন, খামারিরা যাতে সহজে দুধ বিক্রি করতে পারেন, সেজন্য পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে খামারিদের যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
পিবিএ/এল.এন.শাহী/এএম

আরও পড়ুন...