গুচ্ছের নিয়ম মানছে না ইবি

নাজমুল হুসাইন,ইবি প্রতিনিধি: গুচ্ছের নিয়ম অমান্য করে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা আলাদাভাবে নেয়ার বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বিষয়টি বিজ্ঞান বিভাগের আওতায় হলেও পরীক্ষা নেয়া হবে মানবিক বিভাগের প্রশ্নে। যেখানে আলাদাভাবে গুচ্ছভুক্ত একজন শিক্ষার্থীকে ১ হাজার টাকা বেশি গুণতে হবে। গত ২৪ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ.এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের আলাদা ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে বিষয়টি জানা যায়। তবে বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) একাডেমিক কাউন্সিলের (১২৩ তম) মিটিংয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সেই সাথে বিষয়টি নিয়মের পরিপন্থী বলেও জানান শিক্ষকরা।

গুচ্ছের বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বিশেষায়িত বিভিন্ন বিভাগে (সংগীত, চারুকলা, ফোকলোর, স্পোর্টস প্রভৃতি) শিক্ষার্থী ভর্তির জন্যে গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শর্ত মোতাবেক পৃথক ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে। শুধুমাত্র গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা বিশেষায়িত বিভাগ সমূহে আবেদন করতে পারবেন।

উল্লেখিত বিশেষায়িত বিষয়গুলোর মধ্যে ইবিতে তিনটি (চারুকলা, ফোকলোর ও শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান) বিভাগ রয়েছে। তবে গুচ্ছের শর্ত না মেনে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের জন্য আলাদাভাবে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বিভাগটির পরীক্ষা গুচ্ছের বাহিরে গিয়ে নেয়ার কথা জানানো হয়। যেখানে আবেদন ফি এক হাজার টাকা নির্ধারন করা হয়েছে। বিভাগটিতে আবেদনের সময়সীমা থাকছে আগামী ১ আগস্ট থেকে ১৩ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত। গুচ্ছের নিয়মের বাহিরে গিয়ে নেয়া এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যলয়ের শিক্ষকরা।

এদিকে গুচ্ছতে ১হাজার পাচঁশত ত্রিশ টাকা আবেদন করলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ নিয়মের বাহিরে যাওয়ায় অতিরিক্ত ফি গুনতে হবে শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও বিকেএসপি সনদধারীদের জন্য ২০ শতাংশ কোটার সুবিধাসহ ১০০ নম্বরের মধ্যে পাশ মার্ক ২০ ধরা হয়েছে। যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০। এদিকে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগটি এ ইউনিটের (বিজ্ঞান) অর্ন্তভুক্ত হলেও এর প্রশ্ন করা হবে বি ইউনিট (মানবিক) থেকে। যেখানে বাংলা, ইংরেজি, ও সাধারণ জ্ঞান থেকে প্রশ্ন থাকবে। যা বিজ্ঞান অনুষদের প্রশ্নের বিপরীত। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হবেন বলে জানিয়েছেন অনেকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে চালু হয় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগ। তবে সে বছর বিভাগ খোলা হলেও কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়নি। এবিষয়ে বিভাগটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, গুচ্ছের বিষয়টি নিয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনা হয়েছে। এটা নিয়ে আমার কোন মতামত নেই। গত বছর শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতবার নতুন বিভাগ খোলার পর শুরু করতে কিছুটা দেরি হয়ে যায়। এজন্য গত বছর ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি।

এদিকে গুচ্ছের বিষয়টি নিয়ে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আকতার হোসেন বলেন, আমি একাডেমিক কাউন্সিলে এ বিষয়ে প্রতিবাদ করেছি। আমার কাছে মনে হয় এটা নিয়মের পরিপন্থী।

এবিষয়ে রেজিষ্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ.এম আলী হাসান জানান, গুচ্ছের বাহিরে গিয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ও ওই নিয়মে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে গুচ্ছ ভর্তি কমিটি থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, এটা নিয়ে কেন্দ্রীয় ভাবে কথা হয়েছে। শুধু আমরা না, আরো বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় সতন্ত্র ভাবে পরীক্ষা নিচ্ছে।

 

আরও পড়ুন...