গুজব সাধারণত কিছু অযাচাইকৃত তথ্য বা গল্প যা মৌখিক বা লিখিত যোগাযোগের মাধ্যমে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এই গল্পগুলি আংশিক সত্য বা মিথ্যা হতে পারে, তবে মানুষের কৌতূহলজনক তথ্য শেয়ার ও আলোচনা করার প্রবণতার কারণে এগুলো মানুষের কাছে অধিকমাত্রায় আকর্ষণীয় হয়। গুজব পরিচিতদের সম্পর্কে জাগতিক গসিপ থেকে শুরু করে স্বনামধন্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আরও গুরুতর অভিযোগ বা ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব পর্যন্ত হতে পারে। গুজব প্রায়শই প্রোপাগান্ডা হিসেবে জনমতকে প্রভাবিত বা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, একটি নির্দিষ্ট মতাদর্শের প্রচার করতে বা বিরূদ্ধ পক্ষের সুনামকে কলঙ্কিত করতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি জনসাধারনের অনুভূতি এবং আচরণকে ম্যানিপুলেট করতে কৌশলগতভাবে অতিরঞ্জিত বা মিথ্যা তথ্য মিশিয়ে মানুষের ক্রিয়াকলাপকে কাজে লাগিয়ে তাদের এমন সিদ্ধান্ত নিতে পরিচালিত করে যা তারা অন্যথায় নাও করতে পারে। যে কোন সংকট, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অর্থনৈতিক মন্দার সময় গুজব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক এবং উদ্বেগকে বাড়িয়ে জনসাধারণের মাঝে অস্থিরতা সৃষ্টিতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে।
গুজবের ব্যবহার:-
ইতিহাস জুড়ে গুজবকে রাজনৈতিক বিপ্লবের প্রচার, ব্যক্তি স্বার্থ, ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিলে কারসাজি ও নিয়ন্ত্রণ এবং ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাতের জন্য সাম্প্রদায়িক উসকানির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের উদাহরণ রয়েছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় কর্পস ফ্যাক্টরি”গুজব ছড়িয়ে দাবি করা হয়েছিল যে জার্মানরা তাদের নিজস্ব সৈন্যদের মৃতদেহ ব্যবহার করে পণ্য তৈরি করছে, এটি যুদ্ধকালীন প্রোপাগান্ডা হিসেবে কার্যকর প্রমানিত হয়েছিল। আরব বসন্তের সময় তিউনিসিয়ায় ফেসবুক এবং টুইটারের মতো সামাজিক প্লাটফর্মের মাধ্যমে গুজবের দ্রæত বিস্তার ঘটতে দেখা যায়। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশসহ পাশ্ববর্তী একটি দেশে জনগনের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে ফেসবুকে গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। পদ্মা সেতু নির্মানে শিশুদের মাথা লাগবে এমন গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে সারা দেশে ছেলেধরা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাজধানীর বাড্ডায় তসলিমা রেনু নামে এক নারীকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। পরে জানা যায় সন্তানের স্কুল ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যের খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্য নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়লে লবনের দামেও অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও মানুষের প্রয়োজনের অধিক পরিমানে লবণ কেনার হিড়িকও আমরা দেখতে পাই। অতিসম্প্রতি করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দাকে পুঁজি করে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়লে অনেক গ্রাহক আতঙ্কিত হয়ে তাদের ব্যাংক একাউন্ট থেকে জমানো টাকা তুলে ফেলেন। পরবর্তীতে এই তথ্যটি মিথ্যা প্রমাণিত হলে গ্রাহকরা তাদের ভুল বুঝতে পারেন।
গুজব ছড়ানোর কৌশল:-
সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে চিত্রকর্ম, কার্টুন, পোস্টার, পুস্তিকা, চলচ্চিত্র, রেডিও, টিভি, ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সাইবার স্পেসে বিভিন্নভাবে গুজব ছড়ানো হয়ে থাকে। বর্তমানে সাধারণত ছবি এডিট করে অহরহ গুজব ছড়ানো হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে আসল ছবিতে ভিন্ন স্থান ও সময় যুক্ত করে ছবির প্রেক্ষাপট বদলে ফেলা হয়। জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় এমন বিষয়বস্তু নিয়ে মিথ্যা ও চটকদার ভিডিও তৈরি করে গুজব ছড়ানো হয়। এছাড়াও পুরোনো ভিডিওতে বর্তমান সময়ের কথা ব্যবহার করে নতুন ঘটনার জন্ম দেয়া এবং আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে একজনের চেহারায় তার আর্টিফিসিয়াল ভয়েস যুক্ত করে ডিপ ফেইক প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পূর্ণ নতুন একটি ভুয়া ভিডিও তৈরি করে গুজব ছড়ানো হয়। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এড়িয়ে সংবাদের প্রসঙ্গ বদলে ফেলে বানোয়াট তথ্যকে সত্য বলে প্রচারের মাধ্যমেও গুজব ছড়িয়ে থাকে। বিভিন্ন সময় স্বনামধন্য বিশেষজ্ঞের বক্তব্যের ভুল বা বিকৃত অনুবাদ ও মতামত উপস্থাপনের মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয়ে থাকে। মূলধারার গণমাধ্যম থেকে কাল্পনিক উদ্ধৃতি, সত্য খবর পাল্টে ফেলা, অখ্যাত গণমাধ্যম বা ব্লগের খবর ব্যবহার করে কোন গবেষণার ফলাফলের ভুল ব্যাখ্যা ও অকার্যকর তুলনার মাধ্যমেও গুজব ছড়ানো হয়ে থাকে।
অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্বনামধন্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দেশে বিদেশে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য তাদের ছবি বিকৃত বা ব্যাঙ্গাত্মক ভাবে উপস্থাপন ও আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক গুজব ছড়ানো হয়ে থাকে। গুজব ছড়ানোর উদ্দেশ্যে জাতীয় স্পর্শকাতর বিষয় ও সমযোপযোগী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নেতিবাচক প্রতিবেদন তৈরি, প্যারোডি, গান, নাটক-নাটিকা বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া আইডি এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার ওয়েব সাইটের আদলে ভুয়া ওয়েব সাইট তৈরি করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়। অনেকেই ব্যক্তি আক্রোশ থেকে, রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের জন্য কিংবা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য গুজব ছড়িয়ে থাকেন। কেউ কেউ নিছক মজার ছলে ভাইরাল হওয়ার জন্য কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে বেশি ভিউ পাওয়া ও আয়ের উদ্দেশ্যে গুজবের কন্টেন্ট তৈরি করে তা সাইবার স্পেসে ছড়িয়ে দেন।
জীবনের বিভিন্ন দিকের উপর গুজবের প্রভাব:-
ব্যক্তিজীবনে একজন ব্যক্তির চরিত্র ও কাজ সম্পর্কে মিথ্যা গুজব তাদের সুনামকে কলঙ্কিত করতে পারে যা তাদের জন্য দীর্ঘস্থায়ী মানসিক কষ্টের কারণ হতে পারে। একটি মিথ্যা গুজব পারস্পরিক ব্যক্তি পর্যায়ের সম্পর্ককে নষ্ট করে। একটি পরিবারের মধ্যে গুজব ছড়ানোর ফলে সম্পর্কে টানাপোড়েন, পারিবারিক কলহ এবং মানসিক অশান্তি হতে পারে। সমাজে বিভিন্ন শ্রেনি, গোষ্ঠি ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে গুজব ছড়ানো হলে তা সামাজিক সম্প্রীতি এবং সংহতি ব্যাহত করতে পারে। বিশেষ করে রাজনীতি বা ধর্মের মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলির সাথে সম্পর্কিত গুজব সমাজকে মেরুকরণের দিকে নিয়ে যেতে পারে, যা অনেক সময় সামাজিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করে। একটি নির্দিষ্ট শ্রেনি বা গোষ্ঠি সম্পর্কে মিথ্যা গুজব তাদেরকে বৈষম্য, বর্বরতা এমনকি সহিংসতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। চরম ক্ষেত্রে যা দাঙ্গা এবং নাগরিক অস্থিরতাকে উস্কে দিতে পারে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে গুজব রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কাঠামো নষ্ট করতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, গুজব কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি এমনকি সশস্ত্র সংঘাতের দিকে নিয়ে গিয়ে বন্ধু রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করতে পারে।
গুজব প্রতিরোধে প্রতিকার:-
বিশ্বায়নের এ যুগে সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে গুজব বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। গুজবের ক্ষতিকারক প্রভাব মোকাবেলার জন্য নিজেকে সচেতন হতে হবে এবং অন্যকেও সচেতন করতে হবে। জনসাধারনকে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য এবং গুজবের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়ে সাহায্য করতে মিডিয়া লিটারেসি শিক্ষাদানে স্কুল-কলেজ এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলো এমন প্রোগ্রাম গ্রহণ করতে পারে, যা তাদের সমালোচনামূলক চিন্তার দক্ষতা এবং ফ্যাক্ট চেকিং এর কৌশল শেখাবে। দেশপ্রেম, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার আলোকে সোশ্যাল মিডিয়ার দায়িত্বশীল ব্যবহার এই প্লাটফর্মগুলোর মাধ্যমে মিথ্যা তথ্যের বিস্তাররোধে সহায়তা করতে পারে। এছাড়াও গঠনমূলক ও উন্মুক্ত আলোচনাকে উৎসাহিতকরণ গুজবের বিস্তার কমাতে সাহায্য করতে পারে। গুজব প্রতিরোধে গণমাধ্যমকে কোন সংবাদ প্রচার বা প্রকাশের পূর্বে তার সত্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে দায়িত্বশীলভাবে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা উচিত। এছাড়াও মূলধারার গণমাধ্যমগুলো বিভিন্ন অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল, ফ্রিল্যান্সার কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ও গণমাধ্যম সেক্টরে অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের দায়িত্বশীলভাবে সংবাদ পরিবেশনের জন্য বিভিন্ন প্লাটফর্মের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করতে পারে এবং ক্ষেত্রবিশেষে গুজব প্রতিরোধে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
কিভাবে গুজব থেকে দূরে থাকা যায়:-
যে কোন তথ্যকে সত্য হিসেবে গ্রহণ করার পূর্বে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্যদের সাথে শেয়ার করার পূর্বে বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে দেখতে হবে ও ফ্যাক্ট চ্যাকিং এর মাধ্যমে সর্বদা তার বিশ্বাসযোগ্য সূত্র যাচাই করে দায়িত্বশীল শেয়ার করতে হবে। পাশাপাশি তার পেছনে কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠির স্বার্থ আছে কি না তা যাচাই করতে হবে। অযাচাইকৃত বা চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু অনলাইন প্লাটফর্মসহ বিভিন্ন মাধ্যমে শেয়ারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে কিছু তথ্য সত্য কিন্তু তা প্রকাশ পেলে সমাজের বিভিন্ন শ্রেনি বা গোষ্ঠির মাঝে মতভেদ সৃষ্টির মাধ্যমে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে এমন তথ্য প্রকাশ থেকে বিরত থাকা উচিত। সর্বোপরি বস্তুনিষ্ঠভাবে তথ্য বিশ্লেষণ করার জন্য সমালোচনামূলক চিন্তার দক্ষতা বিকাশ, গুজবের পেছনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন করা এবং বিকল্প ব্যাখ্যা বিবেচনা করা গুজব প্রতিরোধে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারে।
আপনি কেন গুজব ছড়াবেন না:-
সাধারণ বিবেচনায় গুজব ছড়ানো একটি অত্যন্ত অনৈতিক ও গর্হিত কাজ। এটি সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও সহানুভ‚তির নীতিকে লঙ্ঘন করে। যে সমাজ নৈতিক ও দায়িত্বশীল কমিউনিকেশনকে মূল্য দেয়, সেখানে গুজব ছড়ানো একজন দায়িত্বশীল নাগরিকের নীতির বিরুদ্ধে যায়। অনেক সময় গুজব নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে এবং তা অনিচ্ছাকৃত পরিণতির দিকে নিয়ে গিয়ে শত্রæতা উস্কে দিতে পারে, দ্বন্দ বাড়িয়ে কিছু ক্ষেত্রে সহিংসতাকে উস্কে দিতে পারে। সর্বোপরি মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর ফলে আইনি পরিণতি বরণ করতে হতে পারে। কেননা সাইবার স্পেসে মিথ্যা তথ্য বা গুজব প্রতিরোধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির বিধান রয়েছে। তাই না জেনে, না বুঝে অতি উৎসাহে গুজব ছড়ানোর ফলে অযাচিত মামলা-মোকাদ্দমায় জড়িয়ে নিজের সুন্দর জীবন নষ্ট ও আপনার পরিবারের সম্মানহানি করবেন না।
গুজবের শিকার হলে করণীয়:-
সাইবার স্পেসসহ বিভিন্ন মাধ্যমে রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান ও কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যা, মানহানিকর অশ্লীল ও আক্রমনাত্মক তথ্য ছড়ালে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আইনি প্রতিকার লাভের অধিকার রয়েছে। অনেক সময় দেখা যায় লোকলজ্জা বা অজ্ঞতার ফলে তারা অপরাধীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে বিরত থাকেন। আপনি যদি গুজবের শিকার হয়ে অসম্মানিত হোন তবে পেনাল কোড, ১৮৬০ অনুসারে মানহানির মামলা রুজু করতে পারবেন। এছাড়াও সাইবার স্পেসে আপনার সম্পর্কে কেউ মিথ্যা তথ্য বা গুজব ছড়ালে সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ এর অধীনেও মামলা রুজু করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট আইনগত সহায়তা পেতে গুজব প্রচারকারী আইডির লিংক, স্ক্রিনশট ও উপযুক্ত তথ্য প্রমাণাদি নিয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
গুজব প্রাচীন এবং আধুনিক উভয় মানব ইতিহাসের একটি অংশ। প্রায়শই ব্যক্তিগত জীবন, পরিবার, সমাজ এবং এমনকি জাতীয় স্তরেও বিপর্যয় সৃষ্টি করে। তাই গুজবের নেতিবাচক প্রভাব থেকে ব্যক্তি, সমাজ ও দেশকে রক্ষা করতে গুজব সম্পর্কে সতর্ক থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকের ডিজিটাল যুগে, গুজব আগের চেয়ে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। গুজবের ক্ষতিকারক প্রভাব মোকাবেলায় মিডিয়া লিটারেসি, তথ্যের ফ্যাক্ট-চেকিং, দায়িত্বশীল সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার, স্বচ্ছতা এবং উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে, আমরা আমাদের জীবন এবং সমাজের উপর এর নেতিবাচক প্রভাব কমাতে একসাথে কাজ করতে পারি। এভাবে আমরা ইতিবাচক পরিবর্তনের মাধ্যমে যোগাযোগের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আরও সচেতন এবং শান্তিপূর্ণ বিশ্ব অর্জনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।
লেখক : কমান্ডার খন্দকার আল মঈন, বিপিএম (বার), পিএসসি।