
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে বিএনপি এবং অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মী যারা গুম, খুন ও হত্যার শিকার হয়েছেন তারা ও তাদের পরিবারের ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকার উদাসীন।
তিনি বলেন, এসব পরিবারের শোক ও মাতম আমরা দেখতে পাই না। তাদের ব্যথা শুধু তাদের পরিবারই বুঝতে পারে। জুলাই আন্দোলনে ১৭ থেকে ১৮ জন রিকশাচালক শহীদ হয়েছেন, তাদের পরিবারগুলো অনেক কষ্টে জীবনযাপন করছে। তাদের সন্তানরা যারা স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করে, তাদের বেতন দিতে পারছে না।
রোববার (৩০ মার্চ) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদল আয়োজিত গুম-খুনের শিকার পরিবারের সদস্যদের মাঝে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে ঈদ উপহার প্রদানকালে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, আজকের অন্তর্বর্তী সরকার যেমন ছাত্রদের, তেমন সাধারণ জনগণ ও শ্রমিকদেরও। এসব পরিবারকে পুনর্বাসনের দায়িত্ব এই সরকারের।
তিনি বলেন, কী সংস্কার করবে না করবে তা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গরিমসি করছে। নির্বাচন নিয়ে সরকার একেক সময় একেক কথা বলছে। অন্তর্বর্তী সরকার নিখোঁজ হওয়া, হারিয়ে যাওয়া, হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে মানুষ হত্যা করা দুনিয়া কাঁপানো আন্দোলনের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। তারা নির্বাচন দিতে দেরি করে কেন?
রুহুল কবির রিজভী বলেন, হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে এত গুম হলো, শহীদ হলো, আহত হলো- অথচ সরকার তাদের কোনো খোঁজ নিচ্ছে না। কিছু কিছু উদ্যোগ চোখে পড়লেও সামগ্রিক উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। অথচ সরকারের কিছু লোক এলাকায় এমপি হবেন, মন্ত্রী হবেন এসব নিয়ে ব্যস্ত আছেন। কুমিল্লার মুরাদনগরে বিএনপি নেতাকর্মীদের হঠাৎ গ্রেফতার করা শুরু হয়েছে ঈদের প্রাক্কালে। কী কারণে গ্রেফতার করা হচ্ছে তা বলছে না, আমি চার থেকে পাঁচবার এসপিকে ফোন দিয়েছি, তিনি ফোন ধরছেন না। বিএনপি নেতাকর্মীরা হাসিনার অত্যাচার-নিপীড়ন সহ্য করেছে, গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, হত্যার শিকার হয়েছে। আপনারাও যদি হাসিনার মতো কাজ করেন, আপনারা দেশটাকে কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছেন?
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনে রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখনো হাসিনার দোসর রয়েছে। তাদের আপনারা লালন করছেন। যারা একটু বিএনপির সমর্থক সরকারি কর্মকর্তা আছেন তাদের ঢাকা থেকে বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তাদের নাজেহাল করা হচ্ছে। এখনো প্রশাসনে হাসিনার জীবাণুরা রয়ে গেছে, তারাই নানা প্রকার ষড়যন্ত্র করছে এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে। এই পরিস্থিতি চলতে দেওয়া যায় না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সহ-সভাপতি আব্দুল আওয়াল।