গুরুতর অভিযোগে দুই রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার

পিবিএ,ঢাকা: বাংলাদেশের দুই রাষ্ট্রদূতকে আচমকা ঢাকায় ফিরিয়ে আনার আদেশকে ‘রুটিন বদলী’ বলে আখ্যা দিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। রাষ্ট্রদূতদ্বয়ের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ এবং তদন্ত রিপোর্টের প্রেক্ষিতে জরুরি তাদের ফিরতে বলা সংক্রান্ত খবরের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী তা নাকচ করেননি, আবার সায়ও দেননি। বলেন, আমাকে তাদের বিষয়ে আরও জানতে হবে।

গুরুতর অভিযোগে দুই রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার

তবে তার আগে মন্ত্রী বলেন, এটা বলতে পারি আমি দায়িত্ব নেয়ার পর এ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া এবং অন্যত্র দুজনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু ওই দুই রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পাইনি বা ব্যবস্থা নিতেও বলিনি। মন্ত্রী বলেন, একটা রেওয়াজ হচ্ছে ৩ বছর হয়ে গেলে আমরা রাষ্ট্রদূতদের বদলী করি। আমি যেটা শুনেছি ওই দু’জন রাষ্ট্রদূতের ৩ বছরের বেশি হয়েছে। একজনের সম্ভবত পৌনে ৪ বছর। তাই তাদের বদলী হচ্ছে।

সোমবার (১০জুন) নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে অনির্ধারিত ব্রিফিংয়ে অন্য বিষয়ের সঙ্গে ওই দুই রাষ্ট্রদূতের বদলীর খবর নিয়েও কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, সামনের দিনে আরও অনেক রদবদল হবে। এগুলোও রুটিন বদলী হবে। যাদের ৩ বছরের বেশি হয়েছে তাদের প্রত্যেকের বদলী হবে।

সন্তানদের লেখাপড়ায় যাতে বিঘ্ন না ঘটে এ জন্য সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ওই সব বদলী সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য, ইরান ও লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদ্বয়কে ফিরিয়ে আনার আদেশ জারি হয়েছে গত এপ্রিলে। তাদের একজনের বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলন এবং অন্যজনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। যা তদন্তও হয়েছে।

সূত্র বলছে, গত বছরের শেষে ভূইয়ার বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনের অভিযোগ আসে। বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব পান জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইমতিয়াজ আহমেদ। আর বৈরুতে নিযুক্ত আবু মোতালেব সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারীর অভিযোগ এলে তদন্ত করেন চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কে এম ফজলুল করিম।

কাছাকাছি সময়ে মরক্কোসহ আরও অন্তত ৩টি রাষ্ট্রে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অভিযোগ জমা পড়ে। মরক্কোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তের জন্য ফাইল ওঠে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে সেটি আটকে যায়। অবশ্য ইরান ও লেবাননে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে এবং উভয় রিপোর্টও জমা পড়েছে।

কিন্তু রিপোর্টে কী সুপারিশ করা হয়েছে তা অতীতের মতই জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। তবে সূত্র দাবি করেছে ওই রিপোর্ট দু’টির প্রায় অভিন্ন সুপারিশের প্রেক্ষিতেই না-কী ইরানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত একেএম মুজিবর রহমান ভূঁইয়া ও লেবাননে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকারকে ঢাকায় ফিরতে চিঠি দেয়া হয়েছে। সূত্র এ-ও বলছে, ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনের অভিযোগ অনেক পুরনো। তিনি জাপান রাষ্ট্রদূত থাকাকালেও এমন অভিযোগ উঠেছিল যার প্রেক্ষিতে তাকে টোকিও থেকে ফেরত আনা হয়।

পিবিএ/আরআই

আরও পড়ুন...