পিবিএ,টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইল পৌর শহরের সাহাপাড়া এলাকার মেয়ে ও সিরাজগঞ্জের গৃহবধু সুমী রানী রায় হত্যা মামলায় স্বামীসহ চারজনের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২২জানুয়ারী) দুপুরে সিরাজগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির এ রায় দেন। একই সাথে এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশও দেন বিচারক। ফাঁসির আদেশপ্রাপ্তরা হলেন, গৃহবধুর স্বামী সুবীর কুমার রায়, ভাশুর ডা. সুশীল কুমার রায়, ভাশুর সুনীল কুমার রায় ও কাকা শশুর মনোরঞ্জন রায়। আসামীরা দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছেন। সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাডভোটেক কায়সার আহম্মেদ লিটন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে টাঙ্গাইল পৌর শহরের সাহাপাড়া এলাকার গোপীনাথ বিশ্বাসের মেয়ে সুমী রানী রায়ের সাথে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার মুজিব সড়কস্থ শীলা জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী সুবীর কুমার রায়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য বিভিন্ন সময় সুমী রানীকে নির্যাতন করে আসছিলেন তার স্বামী ও শশুরবাড়ীর লোকজন।
২০০১ সালের ১২ জানুয়ারী যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করায় গৃহবধুর স্বামী ও শশুরবাড়ীর লোকজন তাকে মারপিট ও শ্বাসরোধে হত্যা করে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে মর্মে প্রচার করা হয় এবং এ বিষয়ে থানায় জিডি করা হয়। পরবর্তীতে মরদেহের ময়নাতদন্তেন প্রতিবেদনে হত্যার বিষয়টি প্রমাণ হলে সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে নিহতের স্বামী ও শশুরবাড়ীর পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা হওয়ার পর থেকেই ওই চার আসামী পলাতক ছিলেন।
মামলার দীর্ঘ শুনানী শেষে মঙ্গলবার (২২জানুয়ারী) দুপুরে বিচারক চারজনের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড দেন। মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবি ছিলেন এ্যাড. আনোয়ার পারভেজ লিমন ও আসামীপক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত স্টেট ডিফেন্সের আইনজীবি এ্যাড. এস এম জাহাঙ্গীর আলম মামলা পরিচালনা করেন। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে নিহত গৃহবধু সুমীর ভাই উৎপল বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘ দিন পরে হলেও আমরা আদালতের কাছে ন্যায় বিচার পেয়েছি।এতে আমরা খুশী। দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার করে রায় কার্যকর করার দাবী জানান তিনি।
পিবিএ/এফএস