গৃহবন্দী এক ঈদ!


শেখ সফিউদ্দিন জিন্নাহ্ : মুসলমানদের সবচেয়ে বড় আনন্দ উৎসব মানেই হলো ঈদ। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। বছরের ১২ মাসের একটি মাস সিয়াম সাধনার মাস। আর ৩০ দিন রোযা রাখার পর আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানানোর দিন ঈদুল ফিতরের দিন।

বিশ্বের কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা এ দিনেরই অপেক্ষায় থাকেন। বাড়ির সকলকে সাথে নিয়ে ঈদগাহে গিয়ে একত্রে নামাজ আদায় করবেন। নামাজ শেষে কোলাকুলি করতেই হবে। একে অপরের বাড়িতে গিয়ে সেমাই পিঠা খাওয়াসহ সকলে সকলের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে ঈদ উৎসব পালন করবেন।

আর এবারের ঈদ কেমন কাটলো এটা পৃথিবীর মানুষ ভালোই অনুভব করেছেন। জীবনে কখনও কোনো সময় এমন নিরানন্দ ঈদ দেখিনি। ঈদের দিন ঘরবন্দি থাকা। বাসা-বাড়িতে একাকী ঈদের নামাজ আদায় করা। কেউ কারও সাথে কুশল বিনিময় না করা। ঈদের দিন বিকেলে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে বের না হওয়া।

আর গৃহবন্দী অবস্থায় পালন করতে হলো ঈদুল ফিতর। সামনে রয়েছে ঈদুল আযহা। জানি না আমাদের ভাগ্যে কি লেখা আছে। এই বন্দিদশা জীবন থেকে আমাদের কি কখনও মুক্তি মিলবে। এ এক দুর্বিসহ অভিজ্ঞতা।

আমার বাপ, দাদা চৌদ্দপুরুষও দেখেনি এমন চিত্র। শুধু চৌদ্দপুরুষ নয়, আমাদের পূর্বপুরুষদের কেউ দেখেনি। পৃথিবী সৃষ্টির পর মানবজাতি কখনোই দেখেনি এমন ভয়াবহতার রূপ।

মসজিদ বন্ধ, একসাথে ঈদগাহে গিয়ে নামাজ আদায় না করা, বাড়ির বাইরে না যাওয়া, সমাগম না ঘটাসহ আরও কতো কি দেখতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, আল্লাহর ঘর পবিত্র কাবা শরীফে তাওয়াফ করাও বন্ধ করে দেয়া হয়। এ কেমন পৃথিবীর রূপ দেখতে হলো। এমন পৃথিবীর সাথে তো আমাদের পরিচয় নেই। কখনও ছিলোও না।

ঈদের দিন সোমবার সকালে বাড়িতে দাদা তার ছোট্ট নাতিকে নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করা কখনো চিন্তায় আসেনি।
কিন্তু কেন এমন অপরিচিত পৃথিবী দেখতে হলো। হায় আল্লাহ আমাদের কি এমন অপরাধ। কেন আমাদের সাথে এমন হচ্ছে। আল্লাহ আমরা তো তোমারই সৃষ্টি বান্দা। তোমারই এবাদত করি, এবং করে যাবো। তাহলে কেন আমাদের এই সাজা দিচ্ছো।

আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করে দাও। আমরা আর পারছি না। স্বাভাবিক করে দাও পৃথিবীর রূপ। আমরাতো তোমার করূনা ভিক্ষা চাই। আল্লাহ তোমার দয়া ছাড়া আমাদের চলার কোন শক্তি নেই। আমাদের দয়া করো আল্লাহ।

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক।

আরও পড়ুন...