গোপালগঞ্জে উদ্বোধন করা হল আসপের দেয়াল

 

পিবিএ,গোপালগঞ্জ: শাহানারা বেগমের বয়স ৬৫। বয়সের ভারে ঠিকভাবে হাটা চলা করতে পারেন না। স্বামী তিন বছর হল বিছানায় পড়া। রয়েছে তিন মেয়ে ও চার ছেলে। তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন আর চার ছেলে সবাই দিন মজুর করেন। সমান্য আয় দিয়ে সংসার ঠিক মত চালাতেই সেখানে হিমশিম খায় সেখানে আবার গরম কাপড়। তাই অন্যের সহায়তা নিয়ে কাপড় নিতে আসেন শাহানারা বেগম।

তিনি জানান, খুব শীত কিন্তু টাকার অভাবে গরম কাপড় কিনতে পারছি না। সেই সাথে পরণের কাপড় ও নেই। তাই এখানে কাপড় নিতে এসেছি। শুধু শাহানারা বেগমই নয় এখান থেকে কাপড় নিতে আসেন শীরিনা বেগম, হবি শেখ, মক্তব আলী শেখসহ অনেকেই।

এর আগে দেশের বিভিন্ন স্থানের মত শীতার্ত ও গরীর মানুষের জন্য গোপালগঞ্জে উদ্বোধন করা হয় আসপের দেয়াল। সেচ্ছাসেবী সংগঠন “আমরা সবাই পরোপকারী”-র উদ্যোগে এ মানবতার দেয়াল তৈরী করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ফিতা কেটে শেখ ফজলুল হক মনি ষ্টেডিয়ামের পাশের দেয়ালে তৈরী এ আসপের দেয়ালের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার।

এসময় পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাইদুর রহমান খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শান্তি মনি চাকমা, সাবেক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেশমা আক্তার হাসি, জেলা য্বুলীগের সভাপতি জি.এম শাহাবুদ্দিন আযম, সেচ্ছাসেবী সংগঠন “আমরা সবাই পরোপকারী”-র সভাপতি শরীফুল ইসলামসহ “আমরা সবাই পরোপকারী’র কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরন করেন অতিথিবৃন্দ।

এ আসপের দেয়াল উদ্বোধন করায় শীতার্থ ও গরীব মানুষেরা এখান থেকে তাদের প্রয়োজনীয় কাপড় নিতে পারবেন ও বৃত্তবানরা তাদের অপ্রয়োজনীয় কাপড় এখানে রেখে দিতে পারবেন।

জেলা শহরের শিশু বনে ঝাপরা করে থাকা শীরিনা বেগম জানান, আমার স্বামী দিন মজুর করেন। দুই ছেলে রয়েছে। অর্থের অভাবে ছেলেকে স্কুলে দিতে পারছি না আবার জামা-কপড় কেন। তাই এখান থেকে কাপড় নিতে এসেছি।

হবি শেখ বলেন, অর্থের অভাবে ছেলে মেযেকে জমা কিনে দিতে পানি না। তাই এখান থেকে পুরাতন কাপড় নিয়ে ছেলেকে দিব।

“আমরা সবাই পরোপকারী”-র সভাপতি শরীফুল ইসলাম, গবীর মানুষেরা অর্থের অভাবে জামা-কাপড় ও শীত বস্ত্র কিনতে পারেন না। তাই তাদেরকে অনেক কষ্ঠ করতে হয়। আবার সমাজের অনেকই পুরাতন কাপড় গরীব মানুষদের দিতে চায়। কিন্তু সেটি তারা নিবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে থাকেন। তাই আমরা আসপের দেয়াল তৈরী করেছি। সমাজের যারা তাদের অপ্রয়োজনীয় জিনিস ও কাপড় এখানে রেখে দিলে গরীব মানুষের এখান থেকে নিজেদের প্রয়োজন মত নিয়ে যেতে পারবেন। যে কারনে আমারা আসপের দেয়াল করেছি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার বলেন, এটি একটি ভাল উদ্যোগ। এর ফলে গরীব মানুষের যেমন কাপড়ের অভাব হবে না তেমনি শীতকালে গরম কাপড়ের অভাবে শীতে কষ্ঠ পেতে হবে। শুধু নিজেদের মুখে হাসি নয় গরীব ও শীতার্ত মানুষে মুখে হাসি ফোটাতে সমাজের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

পিবিএ/এইচএইচ

আরও পড়ুন...