চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনায় মিলল আলামত

গাজীপুরে চলন্ত বাসে এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত মিলেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

শনিবার রাতে গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা ও ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ভর্তি করা হয়। রোববার দুপুরে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষ হয় বলে জানিয়েছেন শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক এ এন এম আল মামুন। তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে পরীক্ষায় ভুক্তভোগীর ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। এরপরও ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য ভুক্তভোগীর ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকায় আলামত পাঠানো হয়েছে।

রোববার বিকেলে গাজীপুরের পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ্ এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ঐ নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত পাঁচজনই গাজীপুর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের মধ্যে সজীব ও শাহীন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ইখলাস উদ্দিনের কাছে, রাকিব মোল্লাহ ও সুমন হাসান জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ইসরাত জেনিফার জেরিনের কাছে এবং সুমন খান জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জুবাইদা নাসরিনের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে বিচারকের নির্দেশে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন জানান, নওগাঁয় আত্মীয় বাড়ি বেড়ানো শেষে ঐ নারী স্বামীর সঙ্গে বাসে এসে শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া বাইপাস মোড়ে নামেন। পরে তিনি মাওনা যাওয়ার উদ্দেশ্যে স্বামীকে নিয়ে তাকওয়া পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। বাসটি গাজীপুর মহানগরী অতিক্রম করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দিয়ে শ্রীপুরের মাওনা ফ্লাইওয়ে পৌঁছানোর আগে বাসের চালক ও হেলপার এবং অন্যরা মিলে উক্ত নারীর স্বামীকে মারধর করে জোর করে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেন। পরে বাসটি মাওনা হয়ে রাজেন্দ্রপুর এলাকার দিকে রওনা হয়। পথে ঐ নারীকে তারা সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে তার সঙ্গে থাকা ব্যাগ এবং নগদ টাকা ছিনিয়ে নেন। ধর্ষণের পর উক্ত নারীকে মাওনা থেকে গাজীপুরের দিকে যাওয়ার পথে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে রাজেন্দ্রপুরের কাছে নির্জন স্থানে ১০০ টাকা দিয়ে বাস থেকে নামিয়ে বাসটি নিয়ে ধর্ষকরা পালিয়ে যান। পরে ঐ নারী হোতাপাড়া এলাকায় অবস্থিত জয়দেবপুর থানায় গিয়ে ঘটনা পুলিশকে জানান।

তিনি আরো জানান, এ ঘটনার আট ঘণ্টার মধ্যে জেলা পুলিশের একাধিক টিম বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এছাড়া লুণ্ঠিত মালামাল এবং বাসটি উদ্ধার করা হয়।

ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বাদী হয়ে শনিবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় একটি মামলা করেন।

আরও পড়ুন...