চলমান অভিযান নিয়ে গয়েশ্বরের সন্দেহ

পিবিএ,ঢাকা: চলমান অভিযানের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তার দাবি রাজধানীতে ক্যাসিনো বাণিজ্য ও সন্ত্রাস-দুর্নীতি বিরোধী চলমান ‘শুদ্ধি অভিযানে’ তিনজনকে গ্রেফতার করে লাখখানেক লোককে আড়াল করার চেষ্টা কি না? সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘আমরা অবশ্যই প্রশংসা করবো, যারা এই চলমান প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখবে তাদের। ত‌বে তিনটি লোককে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে লাখখানেক লোককে যদি আড়াল করার চেষ্টা করা হয়, সেক্ষেত্রে আমরা অসহায়। সেক্ষেত্রে আমরা প্রশংসা করতে পারবো না। কিন্তু এদেরকে আইনের আওতায় এনে, এদের থেকে প্রাপ্ত অর্থ যদি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে যায়, অবশ্যই ধন্যবাদ দেবো।’

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘কিন্তু প্রশ্ন হলো- এটা কি সরকারের উদ্যোগ নাকি দেশপ্রেম থেকে দুঃসাহসিকভাবে উদ্যোগ। এই গ্রেফতারের মধ্যে দিয়ে যারা দুর্নীতির লাগাম ধরতে চায়, তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। তাদেরকে সহযোগিতা করার সদিচ্ছা আমাদের আছে। কিন্তু সরকারের নাটকের অংশ হিসেবে যদি হয়, তাহলে আমরা কোনও সহযোগিতা করতে পারবো না।’
মসজিদের শহর হিসেবে খ্যাত ঐতিহ্যবাহী ঢাকা এখন ‘ক্যাসিনোর শহরে’ পরিণত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের এটাকে বলছেন- ‘ইমেজ রিকভারি’। তার মানে হলো পচন ধরছে এন্টিবায়োটিক। ওবায়দুল কাদের চাইলে নিজেই নিজেদের সহায়তা করতে পারেন। আবার কেউ কেউ বলছে গ্রেফতারকৃতরা বিএনপি করতো। যদি বিএনপি করে থাকতো সে সময় তো তাদের পকেটে ১০ টাকাও ছিলো না। আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার পরে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে।’

একটা ক্যাসিনো তৈরি করতে ২-৪ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হয় দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, ‘এই পানের দোকানে, একটা ঘরের মধ্যে এগুলো ক্যাসিনো না। এগুলো এক ধরনের ফটকাবাজি এবং টাকাগুলোকে এক জায়গায় নেয়া, এছাড়া আর কিছুই না। যাদের ধরা হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দা বাহিনী হয়তো বিব্রত বোধ করছে অনেকের নাম চলে আসায়। আমি অনুরোধ করবো প্রত্যেকের নাম পত্রিকার পাতায় ছাপিয়ে জনসম্মুখে প্রকাশ করা হোক। জনগণ এগুলো জানতে পারলে প্রশাসনের পাশে থাকবে, আস্থা বাড়বে।’

সরকার পদত্যাগ করেও সহযোগিতা করতে পারে এমন দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে খারাপ লোক আছে, কিন্তু ভালো লোকের তো অভাব নাই। তারা যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, তাহলে জনগণকে দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট, সন্ত্রাস থেকে রক্ষা করতে পুলিশবাহিনীই যথেষ্ট। যতই ক্যাসিনো থাকুক এটা কিন্তু জাতির কাছে একমাত্র সংক্রামক ব্যাধি নয়। সারা দেশের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় আছে। সে কারণে সবচেয়ে ভালো সহযোগিতা হয় আপনারা যদি পদত্যাগ করেন।’

নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলামের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমতুল্লাহ প্রমুখ।

পিবিএ/বাখ

আরও পড়ুন...