চাঁদপুরে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে তালা দিল ক্ষুব্দ গ্রাহকরা

মহিউদ্দিন আল আজাদ,চাঁদপুর প্রতিনিধি: টাকা না পেয়ে চাঁদপুর সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ঘেরাও করে তালা মেরে দিয়েছে ক্ষুব্দ গ্রাহকরা। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকাল থেকে চাঁদপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার ফয়সাল শপিং কমপ্লেক্স ভবনে টাকার জন্য চেক নিয়ে গ্রাহকরা জড়ো হন। এ সময় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ টাকা লেনদেন বন্ধ রাখলে উত্তেজিত গ্রাহকরা প্রবেশ গেটে তালা মেরে দেয়।

এক পর্যায়ে ক্ষুব্দ গ্রাহকরা ব্যাংকের গেইটে তালা দিয়ে মিছিল করতে থাকে। খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া এসে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক থাকায় ব্যাংকের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড চাঁদপুর জেলা শাখায় ২২ হাজার গ্রাহক। বর্তমানে ১০০ গ্রাহকের টাকাও দিতে পারছে না ব্যাংক। এছাড়া জেলার বিভিন্ন শাখায় টাকা সংকটের কারণে চাহিদা অনুযায়ী টাকা পাচ্ছে না গ্রাহকরা। এতে টাকা না পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ভোগান্তির শিকার গ্রাহকরা।

সরকার পতনের পর থেকে পুরোদমে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের টাকা লেনদেনের জটিলতা শুরু হয়। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও স্বাভাবিক হয়নি ব্যাংক লেনদেন। বর্তমানে জেলার এই ব্যাংকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা দিতে পারছে। টাকা সংকটে এখনো খুড়িয়ে খুড়িয়েই চলছে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের শাখাগুলো।

গ্রাহক ইয়াকিন খান ও শাহনাজ বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে ব্যাংকে এসে টাকা নিতে পারছি না। ব্যাংকে আসলে তারা বলে সামনের সপ্তাহে আসেন ঠিক হয়ে যাবে। আজকে ব্যাংকে এসে দেখি কোনো টাকা দিচ্ছে না। সকল গ্রাহকরা জড়ো হয়ে গেইটে তালা মেরে দিয়েছে। আমরা আমাদের টাকা চাই।

ব্যাংকের ম্যানেজার মো. মাহবুব আলম বলেন, রোববার ও সোমবার লেনদেন চালু ছিল। ওইদিন গ্রাহকদের সাধ্যমত টাকা দিতে পারিনি। আজ ব্যাংকের পুরোপুরি লেনদেন বন্ধ রাখা হয়। যার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে বাইরে দিয়ে তালা মেরে দেয়। আমরা প্রধান কার্যালয়ে কথা বলেছি ওনারা আমাদেরকে ২০ লাখ টাকা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করি টাকা গুলো আসলে গ্রাহকদের ৫-১০ হাজার টাকা করে দিতে পারব। আমি গ্রাহকদের বলবো, আপনারা একটু ধৈর্য ধরুন। ধৈর্য ধরলে ব্যাংক অবশ্যই আগের মত দাঁড়িয়ে যাবে। ব্যাংকের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আমাদের কিছুদিন সময় দিতে হবে।

চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, আমরা খবর পাই সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে এসে গ্রাহকরা ভিড় জমাচ্ছেন, তারা তাদের টাকা পাচ্ছেন না। পরে থানা থেকে টহল পার্টি ব্যাংকে পাঠানো হয়। পরিস্থিতি আরও অবনতি হলে তখন আমি নিজে এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করি। পরে আমি ব্যাংকের ম্যানেজার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে কিছু টাকা আনার ব্যবস্থা করি। আশা করছি যে টাকা আসবে তা দিয়ে গ্রাহকদের আপাতত সন্তুষ্ট করা যাবে।

আরও পড়ুন...