‘চাঁদা না পেয়ে টাকা-স্বর্ণালঙ্কার ও মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের অভিযোগ’

হাবিবুল হাসান,সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে রাজ কুমার দেবনাথ গংয়ের বিরুদ্ধে চাঁদার টাকা না দেওয়ায় রাস্তা আটকে নগদ টাকা এবং মোটরসাইকেলসহ স্বর্ণের গহনা ছিনতায়ের অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর)দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব মিলানয়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে কালীগঞ্জের বামনহাট গ্রামের মৃত অমল দেবনাথের ছেলে রঞ্জন দেবনাথ এই অভিযোগ করেন। তিনি এঘটনার প্রতিকারের দাবি জানান।

লিখিত বক্তব্যে রঞ্জন দেবনাথ বলেন, আমি চাকুরির সুবাধে সাতক্ষীরা শহরে বসবাস করি এবং মাঝে মধ্যে গ্রামের বাড়িতে যাই।কিন্তু কিছুদিন আগে একই গ্রামের(বামনহাট)কান্তিলাল দেবনাথের ছেলে রাজ কুমার দেবনাথ ও দেব কুমার দেবনাথ, মৃত অসিত কুমার দেবনাথের ছেলে কিংকর দেবনাথসহ একটা সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতকারী ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা আমার কাছে ৪ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি প্রদর্শন করতো।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ৭ সেপ্টেম্বর গ্রামের বাড়ি থেকে সাতক্ষীরা আসার পথে বানিয়াজাংলা এলাকায় পৌছালে উল্লেখিত ব্যক্তিরা অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার পথ গতিরোধ করে। এসময় তারা পুনরায় আমার কাছে চাঁদার উল্লেখিত টাকা দাবি করে। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে রাস্তায় বেদম মারধর করে। এসময় আমার কাছে থাকা নগদ ৬৭ হাজার ৭শ’ টাকা, গলায় থাকা ১৪ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন, (মূল্য-৯০ হাজার টাকা) একটি আংটি (৫৫ হাজার টাকা) এবং আমার ব্যবহৃত ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা মূল্যের সুজুকি জিক্সার ১৫৫ সিসি মোটর সাইকেল (সাতক্ষীরা ল-১২-৫৪৭০) জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়।

রঞ্জন দেবনাথ আরও বলেন, ঘটনার সময় তাদের কাছে থাকা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের ফাঁকা একটি প্যাডে আমার স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে।এছাড়া একটি ভিডিও ধারণ করে নিয়ে আমাকে ছেড়ে দেয়। এসব বিষয়ে থানা পুলিশ বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করলে হত্যাসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে রাজ কুমার গংরা। এসময় আমি জীবনের ভয়ে সেখান থেকে চলে যেতে চাইলে তারা আমাকে সাথে করে নিয়ে কালীগঞ্জ পার করে দেয়। যাতে আমি থানায় যেতে না পারি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, পরের দিন কালীগঞ্জ গিয়ে পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে ঘটনার বিস্তারিত খুলে বললেও তাদের কাছ থেকে কোন সহযোগিতার আশ্বাস পায়নি। ফলে এখন পর্যন্ত আমার মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধার করতে পারিনি। ঘটনার পর থেকে ভীতু সন্ত্রস্থ হয়ে মানসিকভাবে অসুস্থ্য অবস্থায় সাতক্ষীরা শহরের বাসায় অবস্থান করছি।

তিনি চিহ্নিত ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজদের কবল থেকে আমার ব্যবহারিত মোটরসাইকেল, নগদ টাকা এবং স্বর্ণের গহনা উদ্ধার পূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামানা করেন।

এঘটনায় কালীগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির হোসেন জানান, কান্তি দেবনাথের ছেলের চাকরি দেওয়ার কথা বলে রঞ্জন ও পলাশ ৫ লক্ষ টাকা নেয়। কিন্তু আজ ৮ মাস হয়ে গেল চাকরি ও টাকা কোনটাই দেয় না। গত ৭ সেপ্টেম্বর রঞ্জন গ্রামে আসলে লোকজন তাকে নিয়ে আমার পরিষদে আসেন।সেখানে একটা শালিস করা হয় এবং টাকা আগামী ১ মাসের মধে দিবে বলে. অঙ্গীকার করে ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডে লিখিত দেয়। তার মোটরসাইকেলটি আমার জিম্মায় আছে। টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে যাবে বলে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির হোসেন।

আরও পড়ুন...